শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা সাদা করেছেন ১১ হাজার ৮৫৯ জন

এনবিআরের তথ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

সদ্য সমাপ্ত ২০২০-২১ অর্থবছরে ১১ হাজার ৮৫৯ ব্যক্তি ২০ হাজার ৬০০ কোটি কালো টাকা সাদা করেছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশ স্বাধীনের পর কালো টাকা সাদা করা অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র জানায়, এ বছর যে পরিমাণ কালো টাকা সাদা করা হয়েছে তা আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি। আর এতে গড় ট্যাক্স ১০ শতাংশ হিসাবে মোট ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সূত্র জানায়, সাদা করা টাকা শেয়ারবাজার, নগদ, ব্যাংক আমানত, বন্ড, ফ্ল্যাট, জমি ও অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করেছে। সাদা করা মোট অর্থের মধ্যে নগদ, ব্যাংক আমানত এবং অন্যান্য সিকিউরিটিতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হয়েছে। পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে ফ্ল্যাট, বাড়ি ও জমিতে বিনিয়োগ।

কালো টাকা সাদাকারীদের মধ্যে ৭ হাজার ৫৫ জন নগদ, বন্ড এবং ব্যাংক আমানত সাদা করে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার  বেশি ট্যাক্স দিয়েছেন। তারা ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা সাদা করেছেন এই সুযোগের আওতায়। তবে ২৮৬ জন ৪০০ কোটি টাকা সাদা করেছেন এবং পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছেন।

আরও ১ হাজার ৬৪৫ জন ১৯৭০ কোটি টাকা সাদা করে জমিতে বিনিয়োগ করেছেন। অপরদিকে ২ হাজার ৮৭৩ জন ১ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা সাদা করে ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট বা বাড়ি কিনেছেন। চলতি বছরের ৩০ জুন কালো টাকা সাদা করার সুযোগ শেষ হওয়ার আশঙ্কায় এনবিআরের কর্মকর্তারা অজ্ঞাতপরিচয় অর্থের মালিকদের কাছ থেকে কালো টাকা সাদা করার বিপুল সাড়া পেয়েছেন। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলেন, কালো টাকা সাদা করার এই সুযোগ তাদের অর্থ প্রকাশের জন্য উৎসাহী করেছিল। কর কর্মকর্তারা ভবিষ্যতে আইনি জটিলতা এড়াতে এই সুযোগে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিতে উৎসাহ দিয়েছেন।

সরকারি কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্তসহ, পোশাক কারখানার মালিক, অন্যান্য ব্যবসায়ী ৪৭৯ জন কর অঞ্চল-৪ এ ১ দশমিক ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ট্যাক্স দিয়ে ১ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা সাদা করেছেন। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩১ জন বৃহৎ করদাতা (প্রধানত ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক) ১৫২ কোটি টাকা কর দিয়ে ১ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা সাদা করেছেন। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়েছেন ৭৩৯ জন চিকিৎসক। তারাও ১৪২ কোটি টাকা কর দিয়েছেন। আরও ৬১১ জন ঢাকা কর অঞ্চল-১ এ ১ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করেছেন। এদের মধ্যে গাড়ি আমদানিকারক, পোশাক কারখানার মালিক, সোনা ব্যবসায়ী, জুয়েলারি ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার রয়েছেন। ২০২০ সালের ১ জুলাই দেওয়া সুযোগে চলতি বছরের ২৫ মে পর্যন্ত আরও ১০ হাজার ৪০৪ জন কালো টাকা সাদা করেছেন। ১৪ হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা সাদা করায় সরকার তাদের কাছ ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা কর পেয়েছে। ২০০৫-০৬ হতে ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত কালো টাকা সাদার করার সুযোগ দিয়ে সরকারের আয় হয়েছে ১৪ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেছেন, গত ২০২০-২১ অর্থবছরের মতো চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে চলতি অর্থবছরে কর বাড়ানোর পাশাপাশি কিছু শর্ত আরোপ করায় গত ২০২০-২১ অর্থবছরের মতো সাড়া নাও পাওয়া যেতে পারে। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের শুধু জুন মাসেই ১ হাজার ৪৫৫ জন ৬৯০ কোটি কালো টাকা সাদা করেছেন।

সর্বশেষ খবর