শুক্রবার, ৯ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

ইভ্যালির বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু দুই সদস্যের কমিটি

বিশেষ প্রতিনিধি

অনলাইন মার্কেটপ্লেস ইভ্যালির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। দুদকের পক্ষ থেকে ইভ্যালির আর্থিক অনিয়ম খতিয়ে দেখতে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংস্থার সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরীকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অন্য সদস্য হলেন সহকারী উপপরিচালক মুহাম্মদ শিহাব সালাম। গতকাল দুদকের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তবে দুদকের অন্য এক সূত্র জানান, চলতি বছরের শুরু থেকেই দুদকের এ অনুসন্ধান টিম ইভ্যালির কর্মকান্ডের ওপর নজরদারি করছে। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি পাওয়ার পর সে কাজের গতি বেড়েছে।

এর আগে গ্রাহক থেকে অর্থ নিয়ে সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করাসহ নানা অভিযোগে ইভ্যালির বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করে দুদক। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর এবং দুদককে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। দুদকসূত্র জানান, সম্প্রতি তারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ইভ্যালির আর্থিক অনিয়ম খতিয়ে দেখার বিষয়ে একটি চিঠি পেয়েছেন। ওই চিঠির সূত্র ধরেই অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। অনুসন্ধানে ইভ্যালি গ্রাহকদের থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে কী করেছে জানার পাশাপাশি এসব অর্থ মানি লন্ডারিং করে কোথাও পাচার হয়েছে কি না তা-ও জানার চেষ্টা করবে। গ্রাহকের অর্থ পাচার হলে ইভ্যালির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা হবে। বিশেষ করে ৩০ বা ৪৫ দিনে মাল ডেলিভারির প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নিয়ে ৯০ দিন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১০০ দিন পার হওয়ার পরও ক্রেতা মাল পাচ্ছেন না। এ ধরনের অভিযোগগুলো অধিক গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হবে বলে জানা গেছে। যেমন একজন গ্রাহক ৩ এপ্রিল একটি এসি ও একটি রেফ্রিজারেটর অর্ডার করেন যার ইনভয়েস নম্বর যথাক্রমে EVL195496954, EVL 486722880। এ অর্ডারের মাল এখনো ওই গ্রাহক পাননি। এ ধরনের বিষয়কে প্রতারণা হিসেবে বিবেচনা করে ইভ্যালির সার্বিক কর্মকান্ড তদন্ত করা হবে বলে জানা গেছে। ৪ জুলাই দুদকে পাঠানো চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ইভ্যালি ডটকম চলতি সম্পদ দিয়ে মাত্র ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ গ্রাহককে পণ্য সরবরাহ বা অর্থ ফেরত দিতে পারবে। বাকি গ্রাহক ও মার্চেন্টের পাওনা পরিশোধ করা ওই কোম্পানির পক্ষে সম্ভব নয়। এ ছাড়া গ্রাহক ও মার্চেন্টদের থেকে নেওয়া ৩৩৮ দশমিক ৬২ কোটি টাকার কোনো হদিস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এসব অর্থ আত্মসাৎ বা পাচার হয়েছে কি না চিঠিতে খতিয়ে দেখার অনুরোধ করা হয়। দুদকের একজন কর্মকর্তা জানান, এর আগে দুদকের কাছে গ্রাহক পর্যায়ের কিছু অভিযোগ জমা পড়েছিল। কিন্তু সেসব অভিযোগে সুনির্দিষ্ট কিছু উল্লেখ ছিল না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধান শুরু করা হচ্ছে। এ ছাড়া অন্তত পাঁচটি ব্যাংক ইভ্যালিসহ ১১টি ই-কমার্স কোম্পানির সঙ্গে কার্ডে লেনদেন থেকে গ্রাহকদের বিরত থাকতে বলেছে।

সর্বশেষ খবর