রবিবার, ১১ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা
ইউরো কাপ ফাইনাল

ইংল্যান্ডের প্রথম না ইতালির দ্বিতীয়

মেজবাহ্-উল-হক

ইংলিশ ফুটবল মানেই লম্বা পাস, আর ইতালি জমাট রক্ষণভাগের জন্য বিখ্যাত! কিন্তু প্রচলিত এই কৌশল থেকে বেরিয়ে এসেছে দুই দলই। এখন ছোট ছোট পাসের শৈল্পিক ফুটবল খেলে ইংল্যান্ড। আর ইতালি প্রচন্ড আক্রমণাত্মক। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দুই তাদের খোলস উঠে গেছে ইউরোপ সেরার লড়াইয়ের ফাইনালে। রাতেই দুই দল মুখোমুখি। ইংল্যান্ডের সামনে প্রথমবারের মতো ইউরোতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি। আর ১৯৬৮ সালের পর ইতালির সামনে সুযোগ এসেছে দ্বিতীয়বারের মতো ইউরো কাপের ট্রফিটা উড়িয়ে ধরার।

ইংলিশরা সেই ১৯৬৬ সালে বিশ্বকাপ জয়ের পর আর বলার মতো কোনো ট্রফিই জিততে পারেনি। সেভাবে সুুযোগই তৈরি করতে পারেনি। তবে এবার কোচ গেরেথ সাউথগেটের ক্যারিশম্যাটিক কৌশলে বদলে যাওয়া ইংল্যান্ড শিরোপার অন্যতম দাবিদার। তা ছাড়া খেলা হবে ইংল্যান্ডের ওয়েম্বলিতে। স্বাগতিক হওয়াটাও প্লাস পয়েন্ট। সে কারণে ‘প্রথম’ ইউরো কাপ জয়ের স্বপ্নটা পূরণ হতেই পারে ইংল্যান্ডের। অন্যদিকে ইতালিকে বদলে দেওয়ার নায়ক হচ্ছেন কোচ রবার্তো মানসিনি স্বপ্ন দেখাচ্ছেন আজ্জুরিদের। কোচ হওয়ার পর মানসিনি ইতালিয়ান ফুটবলের ধরনেই অনেকটা পরিবর্তন এনেছেন। ইতালিয়ানদের তিনি বুঝিয়েছেন, শিরোপা জিততে যেমন ‘জমাট’ ডিফেন্স লাইন থাকতে হয় তেমনি আক্রমণেও ক্যারিশমা দেখাতে হবে। মানসিনির কৌশলেই সেমিফাইনালে ‘ক্যারিশম্যাটিক’ স্পেনকে ঠেকিয়ে দিয়েছেন আজ্জুরিরা। কোয়ার্টার ফাইনালে তারা ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ দলকে হারিয়ে। নকআউট পর্ব থেকেই একের পর এক বড় বাঁধার মুখে পড়ছে ইতালি। রাতে শেষ বাধাটা অতিক্রম করার লড়াইয়ে মাঠে নামবে মানসিনির শীর্ষরা। তবে ইতালির স্বপ্ন ফিকে হয়ে যেতে পারে হ্যারি কেইনকে আটকাতে না পারলে। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ফাইনালে উঠতে না পারলেও ৬ গোল করে গোল্ডেন বুট জিতেছিলেন কেইন। তা ছাড়া কোচ সাউথগেট ও কেইন অনেক দিন একসঙ্গে থাকার কারণে তাদের মধ্যে বোঝাপড়াও দারুণ। সাইডলাইন থেকে কোচের ইশারা এক পলকেই বুঝে যান ইংলিশ অধিনায়ক। তাই ফাইনালে আসল লড়াইটা হবে কেইন বনাম ইতালির ডিফেন্সের মধ্যে।

ইতালিতে আলাদা করে বড় তারকা খুঁজে পাওয়া কঠিন। তাদের শক্তি হচ্ছে সম্মিলিত প্রয়াস। একসঙ্গে আক্রমণভাগে উঠে গিয়ে প্রতিপক্ষের ডিফেন্সকে তছনছ করে দিতে ওস্তাদ দলটি। তবে ইংল্যান্ডও সতর্ক। এ পর্যন্ত ইউরোতে সেরা সাফল্য দেখিয়েছে ইংলিশ ডিফেন্স। ফাইনালে উঠতে মাত্র একবারই তাদের জালে বল প্রবেশ করাতে পেরেছে প্রতিপক্ষ। সেটাও ডেনমার্কের বিরুদ্ধে ফ্রি-কিকে। তবে এবার পুরো টুর্নামেন্টেই দুর্দান্ত খেলেছে ইংল্যান্ড। চার গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার লড়াইয়ে এগিয়ে ইংলিশ অধিনায়ক। আজ ইংলিশ তারকাকে আটকাতে না পারলে ইতালির স্বপ্ন ভঙ্গ করার জন্য কেইনই যথেষ্ট। তবে মাঠে মানসিনির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ইংল্যান্ডের ইউরো জয়ের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। তবে যে দলই চ্যাম্পিয়ন হোক না কেন ফাইনালে ফুটবলপ্রেমীরা যে ভরপুর বিনোদনই দেখতে পাবেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দুই দলের গতি-শক্তি-মস্তিষ্কের লড়াই বলে কথা!

সর্বশেষ খবর