সোমবার, ১২ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ বিষয়ে মন্তব্য যুক্তরাজ্যের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাজ্যের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনের কিছু অংশে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করায় ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার জাভেদ প্যাটেলকে তলব করেছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (পশ্চিম ইউরোপ ও ইইউ) ফাইয়াজ মুরশিদ কাজীর দফতরে ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার জাভেদ প্যাটেলকে তলব করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অধ্যায়ে এমন কিছু বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে, যা বাংলাদেশকে হতাশ করেছে। বিশেষ করে বিএনপি চেয়ারপারসন  বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থানকে ‘হাউস অ্যারেস্ট’ (গৃহবন্দী) হিসেবে মন্তব্য করা চরম বিভ্রান্তিমূলক। বেগম খালেদা জিয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে, তাঁর ভাইয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফৌজদারি দন্ডবিধি-১৮৯৮ অনুসারে তাঁর কারাদন্ড স্থগিত করে গত বছরের ২০ মার্চ তাঁকে (খালেদা জিয়া) মুক্তি দেওয়া হয়। বেগম খালেদা জিয়া বিদেশ যাবেন না, দেশে চিকিৎসা নেবেন, এই শর্তে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, প্রাথমিকভাবে ছয় মাসের জন্য কারাদন্ড স্থগিত করে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। পরে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর ও ২০২১ সালের মার্চে দুই দফায় তাঁর কারাদন্ড স্থগিত করে মুক্তির আদেশের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।

বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থানের বিষয় নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি থাকলে যুক্তরাজ্যের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্য সরকার যাতে বাংলাদেশ সরকার কিংবা সরকারি দল আওয়ামী লীগের বিষয়ে কটাক্ষমূলক ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকে, সেটি তলবের সময় ব্রিটিশ দূতকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।  যুক্তরাজ্যের মানবাধিকারবিষয়ক প্রতিবেদনে বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গে মন্তব্য নিয়েও সরকার উদ্বেগ জানিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতিবেদনে বাংলাদেশে অবস্থানের ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের যেভাবে অভিহিত করা হয়েছে, তা যেমন আন্তর্জাতিকভাবে ঠিক নয়, তেমনি তা বাংলাদেশের আইনেও স্বীকৃত নয়। যুক্তরাজ্যের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার জাভেদ প্যাটেল বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয়গুলো তাঁর দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তুলে ধরবেন বলে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করেছেন। তিনি জানান, তাঁর দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। মানবাধিকার ও সুশাসন নিয়ে দুই দেশ বিদ্যমান কাঠামোর আওতায় ইতিবাচকভাবে আলোচনা চালিয়ে যাবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। জাভেদ প্যাটেল বাংলাদেশকে ‘পরিপক্ব গণতন্ত্র’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের কোনো দলের পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নেয়নি।

সর্বশেষ খবর