বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার সিদ্ধান্ত ভুল

প্রতিদিন ডেস্ক

আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার সিদ্ধান্ত ভুল

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন ও ন্যাটো সামরিক জোটের সেনা সদস্যদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্তের ফলে দেশটির নিরীহ মানুষকে কট্টরপন্থি তালেবান গোষ্ঠীর ‘হত্যাকান্ডের’ মুখে পড়তে হবে। সূত্র : এএফপি। স্থানীয় সময় গতকাল জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন জর্জ ডব্লিউ বুশ। চলতি বছরের জুনে আফগানিস্তান থেকে চূড়ান্ত পর্যায়ে সেনা প্রত্যাহার শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো। আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশটি থেকে সব সেনা সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। জর্জ ডব্লিউ বুশ বলেন, ‘আফগানিস্তানের নারী ও শিশুরা অবর্ণনীয় কষ্টের মুখে পড়তে যাচ্ছে। এটা একটি ভুল। তাদের এই নিষ্ঠুর গোষ্ঠীর (তালেবান) শিকার হওয়ার জন্য ছেড়ে দেওয়া হলো। এ সিদ্ধান্ত আমার মন ভেঙে দিচ্ছে।’ জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেলও ‘একইভাবে বিষয়টি অনুভব করেন’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের এপ্রিলে আফগানিস্তান থেকে চূড়ান্ত ধাপে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সে সময় দেশটিতে ২ হাজার ৫০০ মার্কিন সেনা এবং ৭ হাজার ৫০০ ন্যাটো সেনাসদস্য অবস্থান করছিল। এদিকে মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনীর সদস্যরা আফগানিস্তান ছাড়তে শুরু করার পর থেকে আফগানিস্তানে সংঘাত বেড়েছে। তালেবান চাইছে পশ্চিমা-সমর্থিত আফগান সরকারকে উৎখাত করতে। এর জের ধরে আফগান সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে হতাহত হয়েছে বহু। আফগানিস্তানের বেশির ভাগ অঞ্চল দখলের দাবি করেছে তালেবান। এ কারণে আফগান বাহিনীর সদস্যরা দেশ ছেড়ে পালাতেও বাধ্য হচ্ছেন। আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে মঙ্গলবার জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) মুখপাত্র বাবর বেলুচ বলেন, আরেকটি মানবিক বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে আফগানিস্তান। আফগানিস্তানে একটি শান্তি চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থতা এবং বর্তমান সহিংসতা বেড়ে গেলে দেশটির ভিতরে ও প্রতিবেশী দেশগুলোতে আরও বাস্তুচ্যুতি হতে পারে। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার ধারণা অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে দেশটিতে ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ নতুন করে বাস্তুহারা হয়েছে। এতে দেশটির প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর আফগানিস্তানে বেসামরিক মানুষের মৃত্যু ২৯ শতাংশ বেড়েছে। আফগানিস্তানে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল তালেবান সরকার। কিন্তু নাইন-ইলেভেনের পর আফগানিস্তানে হামলা চালায় মার্কিন বাহিনী। সে সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন জর্জ ডব্লিউ বুশ। এরপর দেশটিতে মার্কিন সেনা ছাড়াও ন্যাটোর সেনারা অবস্থান নেয়।

সর্বশেষ খবর