শনিবার, ২৪ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

ভূমধ্যসাগরে মৃত্যু ১৭ বাংলাদেশির

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

ভূমধ্যসাগরে মৃত্যু ১৭ বাংলাদেশির

সমুদ্রপথে অবৈধ ইউরোপ যাত্রায় উত্তাল ভূমধ্যসাগরে প্রাণ গেল আরও ১৭ বাংলাদেশির। তাদের মরদেহ গত বুধবার উদ্ধার করেছে তিউনিসিয়ান কোস্টগার্ড।

লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বিভিন্ন দেশের আরও ৩৮০ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে।

তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, লিবিয়ার উত্তর-পশ্চিম উপকূল জুয়ারা থেকে শরণার্থীদের নিয়ে রওনা হয়েছিল নৌকাটি। সিরিয়া, মিসর, সুদান, এরিত্রিয়া, মালি এবং বাংলাদেশের শরণার্থীরা ছিলেন ওই নৌকায়। ভূমধ্যসাগর দিয়ে যাওয়ার সময় তিউনিসিয়ার কাছে নৌকাটি ডুবে যেতে শুরু করে। তখনই ১৭ জন বাংলাদেশি যাত্রী ডুবে যান বলে জানা গেছে। তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড ৩৮০ জনকে দ্রুত উদ্ধার করে। তিউনিসিয়ার উপকূলে নৌকাডুবির নতুন ঘটনা নয়। ভূমধ্যসাগর ধরে লিবিয়া থেকে ইতালির শরণার্থীদের পছন্দের পথ। গত কয়েক বছরে এই পথ ধরে বহু মানুষ ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি। গত কিছুদিন আবহাওয়া ভালো ছিল না বলে যাতায়াতও বন্ধ ছিল। আবহাওয়া একটু ভালো হওয়ায় এই নৌকাটি সাগরে পাড়ি দেয় বলে জানা গেছে। তবে তাদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর আগে ২৪ জুন ভূমধ্যসাগর থেকে বাংলাদেশি, মিসরীয়সহ মোট ২৬৭ জনকে উদ্ধার করে তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড। তাদের মধ্যে ২৬৪ জনই ছিলেন বাংলাদেশি। বাকি তিনজন মিসরের নাগরিক। তারা লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে ইতালির পথে রওনা হয়েছিলেন। ভূমধ্যসাগরে তাদের ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। তাদের উদ্ধার করে তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড। গত ১০ জুন ১৬৪ বাংলাদেশিকে তিউনিসিয়া উপকূল থেকে উদ্ধার করে দেশটির কোস্টগার্ড। তারা ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তার আগে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার সময় গত ১৮ মে ৩৬ জন এবং ২৭ ও ২৮ মে উপকূল থেকে ২৪৩ বাংলাদেশিকে উদ্ধার করে তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড। এ ছাড়া মে মাসে লিবিয়ার অবৈধ অভিবাসন দমন বিভাগের (ডিসিআইএম) কর্মকর্তারা আলজেরিয়ার সীমান্তবর্তী মরু এলাকা দারাসে অপহরণকারীদের কবল থেকে ৮৬ বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেন। তাঁরা বেনগাজি হয়ে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে ভূমধ্যসাগরে যাওয়ার পথে অপহরণকারীদের কবলে পড়েছিলেন।

রেড ক্রিসেন্টের তথ্য অনুযায়ী, লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টাকালে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১ হাজারের বেশি অভিবাসী তিউনিসিয়ায় আটক হয়েছেন। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২১ জুন পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে বিভিন্ন দেশের প্রায় ২০ হাজার জন ইতালিতে পৌঁছেছেন। এ তালিকার শীর্ষে থাকা বাংলাদেশের আড়াই হাজারের বেশি ব্যক্তি ইউরোপে পৌঁছেছেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তথ্যানুসারে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত অবৈধভাবে ইউরোপ যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে আট শতাধিক অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে।

সর্বশেষ খবর