বুধবার, ১১ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

সবাই টিকা না পাওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি বাধ্যতামূলক

নিজস্ব প্রতিবেদক

সবাই টিকা না পাওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি বাধ্যতামূলক

ড. বিজন কুমার শীল

অণুজীব বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল বলেছেন, দেশের সবাইকে টিকার আওতায় আনতে পারলে ভালো। কিন্তু এটি সময়সাপেক্ষ। এই সময়ে আমাদের সতর্কতার সঙ্গে এগোতে হবে। মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি বাধ্যতামূলক মেনে চলতে হবে। এ ছাড়া জিংকের সমন্বয়ে তৈরি ভিটামিন সি-জিংক সেবনেও ডেল্টা ভাইরাস প্রতিরোধ সম্ভব। এটি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এ ধরনের ভিটামিন উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে অনুমোদন দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এ ছাড়া সাইলিডাস (Sialidase) নামে এক ধরনের নাকে দেওয়া স্প্রে আছে তা ব্যবহারেও করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনের প্রয়োজন আছে। আশা করি, এটি শিগগিরই অনুমোদন পাবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন             গণবিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক। প্রায় ১০ মাস পর গত বুধবার দেশে ফিরেছেন অণুজীব বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল। এর মধ্যে তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাজে যোগ দিয়েছেন। গতকাল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র আয়োজিত এক ওয়েবিনারেও অংশ নেন গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান।

দেশে ফেরার পেছনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান ড. বিজন কুমার শীল। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ইতিবাচক মনোভাবের পাশাপাশি আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সিঙ্গাপুরের ঢাকা দূতাবাস খুবই সহযোগিতা করেছে। আর সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। বিশেষভাবে তাকে ধন্যবাদ। ওয়ার্ক পারমিট অনুযায়ী দেশে দুই বছর থাকতে পারবেন বলেও জানান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি কিট উদ্ভাবক ড. বিজন কুমার শীল।

অণুজীব বিজ্ঞানী বিজন কুমার শীল বলেন, বিশ্বজুড়েই এখন করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে। এর বৈশিষ্ট্য হলো দ্রুত ছড়ায় এবং অল্প সময়ের মধ্যে বেশি মানুষকে সংক্রমিত করে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ভয়াবহতার জন্য অন্যান্য মিউটিশনের (পর্যায়ক্রমে রূপান্তর) সঙ্গে  T19R  মিউটিশন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ কারণে এ ভাইরাস শ্বাসতন্ত্রের উপরিভাগে ঠিক ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মতো উৎপাদন করার সুয়োগ পেয়েছে। করোনা প্রতিরোধে টিকা খুবই কার্যকর পদ্ধতি। কিন্তু বাংলাদেশের জনসংখ্যার তুলনায় এখন পর্যন্ত টিকা কম পাওয়া গেছে। তবে সরকার টিকা সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু টিকা পাওয়ার আগ মুহূর্তে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কমাতে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে।

গণবিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ডেল্টা ভাইরাসের সঙ্গে ফ্লু ভাইরাসের যথেষ্ট মিল রয়েছে। এটি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়ায়। ফলে পরিবারের কেউ আক্রান্ত হলে বাকি সবাই আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ভাইরাসের ভয়াবহতা রোধে কেউ একজন আক্রান্ত হলে তার নিকটজন সবাইকে পরীক্ষা করতে হবে। হাঁচি কাশি দেওয়ার সময় অবশ্যই কাপড় বা টিস্যু ব্যবহার করতে হবে। নিয়মিত মাস্ক পরিধান এবং ভ্যাকসিন গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করে এই অণুজীব বিজ্ঞানী বলেন, আক্রান্ত রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। ডেল্টা ভাইরাসের চিকিৎসার মতো ওষুধ বিশ্ববাজারে বিদ্যমান আছে। তা কাজে লাগাতে হবে। আমাদের মধ্যে সচেতনা বাড়াতে হবে। লকডাউন আমাদের দেশের মানুষের জন্য খুবই কষ্টের। এখন বিকল্প উপায় নিয়েও ভাবতে হবে।

সর্বশেষ খবর