শিরোনাম
বুধবার, ১১ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

এডিসি সাকলায়েনের ভূমিকায় বিব্রত পুলিশ

-ডিএমপি কমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক

এডিসি সাকলায়েনের ভূমিকায় বিব্রত পুলিশ

পরীমণিকে নিয়ে বাসায় ১৮ ঘণ্টা কাটানোর ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে এডিসি গোলাম সাকলায়েন শিথিলের ভূমিকায় বিব্রত পুলিশ বাহিনী। তাকে গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) থেকে বদলি করা হয়েছে। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। গতকাল দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব বলেন পুলিশ কমিশনার। তিনি বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা সাকলায়েন পরীমণির কোনো মামলা তদারকির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সঙ্গত কারণে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে বাহিনীর শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা ভঙ্গের কারণে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরীমণির বিষয়ে কোনো ব্যবসায়ীর তালিকা হয়েছে কি না, কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পরীমণির বিষয়ে কোনো ব্যবসায়ীর তালিকা হচ্ছে না বা কাউকে গ্রেফতারের জন্য কাজ করছে না পুলিশ। মডেলদের সঙ্গে সম্পর্ক ফাঁসের হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেকেই এ ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বাড়িতে থাকা বন্ধ করে দিয়েছেন। পুলিশের কাছে তারা জানতে চাচ্ছেন- আমরা কি বাড়িতে থাকব? আমি বললাম কেন? তারা বলছেন, আমাকে তো ওমুক মিডিয়া থেকে ফোন করে বলেছে পরীমণি নাকি রিমান্ডে আমার নাম বলেছে! অথবা পিয়াসা আমার নাম বলেছে! আমি তাকে বলেছি, ভাই আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগটা কী? কোনো মামলা হয়েছে? তখন তিনি বলেন- কখন কে-কি করে তা তো জানি না। ডিএমপি কমিশনার বলেন, একাধিক ব্যক্তি আমাদের কাছে এবং মন্ত্রী মহোদয়ের (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) কাছে জানিয়েছেন, মডেল ইস্যুতে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন ব্যক্তিদের তালিকার কথা বলে তাদের কাছে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে। তাদের বলা হচ্ছে, আপনি যদি এই পরিমাণ অর্থ না দেন, তাহলে আমাদের কাছে যে তথ্য আছে তা দিয়ে নিউজ করে দেব। এসব নিউজ করে হয়তো তাদের সামাজিকভাবে হেনস্তা করা যাবে কিন্তু আইনিভাবে তারা কোনো অপরাধ করেছেন বলে আমি মনে করি না। যাদের ফোন দিয়ে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে তারা মামলা করছেন না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, তারা সামাজিক মর্যাদার জায়গায় আছেন বলেই মামলা করতে চাচ্ছেন না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি পরীমণি বলেন আমাকে সিনেমার নায়িকা বানানোর কথা বলে ওমুক ব্যক্তি আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন, সেটা একটা মামলার বিষয় হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী আসামি হতে পারেন অথবা ওই ব্যবসায়ী যদি বলেন পরীমণি আমাকে ফাঁদে ফেলে আমার কাছ থেকে ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এমন কোনো অভিযোগ কি পরীমণির পক্ষ থেকে করা হয়েছে? অথবা ব্যবসায়ীর পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে এমন অভিযোগ করা হয়েছে? কোনোটিই করা হয়নি। তো পুলিশ কেন তালিকা করবে? পুলিশের পক্ষ থেকে এমন কোনো তালিকা তৈরি হচ্ছে না। সিআইডি থেকে সাংবাদিকদের বলা হচ্ছে, ব্ল্যাকমেলের বিষয়ে তারা (সিআইডি) বেশকিছু অভিযোগ পেয়েছে। এমন প্রশ্নে ডিএমপি কমিশনার বলেন, তারা যদি অভিযোগ পেয়ে থাকে তাহলে তাদের অনুরোধ করব থানায় মামলা করাক। মামলা তো সিআইডিতে হবে না, মামলা থানায় অথবা আদালতে হবে। মামলা হওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে। আমি নিজেও সিআইডি প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি। সিআইডি প্রধান বলেছেন, এ ধরনের তালিকা তৈরি করা অথবা কাউকে আটক করার আইনি কোনো ভিত্তি নেই এবং এ ধরনের কোনো কাজ পুলিশের কোনো সংস্থা করছে না। কোনো তালিকা তৈরি করা অথবা আটক করা হবে ধরনের কোনো কাজ করছে না পুলিশ। পুলিশের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আরও বলেন, পরীমণির বাসায় যে মাদক পাওয়া গেছে এক্ষেত্রে পরীমণি বলেছেন তার কাছে লাইসেন্স আছে। লাইসেন্স থাকলেও তার কাছে কতটুকু মদ ছিল, লাইসেন্স অনুযায়ী তিনি কতটুকু মদ নিতে পারেন, এসবের বৈধতা আছে কি না, এগুলো তদন্ত করে ওই মামলায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর