শনিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

সুশাসনের পথে এগোলেই বঙ্গবন্ধু স্বমহিমায় থাকবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সুশাসনের পথে এগোলেই বঙ্গবন্ধু স্বমহিমায় থাকবেন

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, পাকিস্তানপন্থার রাজনীতি পরাজিত করার পাশাপাশি দুর্নীতি-লুটপাট-দলবাজি-ক্ষমতাবাজির অবসান করে সুশাসনের পথে এগোতে পারলেই বঙ্গবন্ধু স্বমহিমায় জাগরূক থাকবেন। জাসদ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট জাতির ইতিহাসে বড় ট্র্যাজেডি, বিয়োগান্তক ঘটনা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ড একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ড। খুনিরা এ হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে জঘন্যতম বর্বরতা, নির্মমতা, পৈশাচিকতার প্রকাশ ঘটিয়েছিল। খুনিরা বঙ্গবন্ধুকে শুধু শারীরিকভাবে হত্যা করেনি, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের আত্মাকেই হত্যা করতে চেয়েছিল।

দলীয় সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, সহসভাপতি মীর হোসাইন আখতার, নুরুল আখতার, ফজলুর রহমান বাবুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন মোল্লা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহর আলী চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদের চৌধুরী, মোহাম্মদ মোহসীন, রোকনুজ্জামান রোকন, ওবায়দুর রহমান চুন্নু, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুন্নবী, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা প্রমুখ।

ইনু বলেন, খুনিরা হত্যাকান্ডের পর পাকিস্তানি আত্মাকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের দেহে প্রতিস্থাপন করতে সংবিধান থেকে চার নীতি মুছে ফেলে, ইতিহাসের ভাগাড় থেকে কুখ্যাত দ্বি-জাতিতত্ত্ব ও ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা তুলে আনে, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নির্বাসিত করে, বেতার-টিভি-গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধু নামটি উচ্চারণ বন্ধ করে দেয়, রাজাকার-আলবদর-পাকিস্তানি দালালদের সমাজে-রাষ্ট্রে-রাজনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। বাংলাদেশকে পাকিস্তানের পথে ঠেলে দেয়। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করা আর রাজাকারদের মহিমান্বিত করা শুরু হয়। মোশতাক-জিয়া-খালেদা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পক্ষে, হত্যাকান্ডের পক্ষে সাফাই গায়, ওকালতি করে, খুনিদের পুরস্কৃত করে। হত্যাকান্ডের বিচার বন্ধ করে রাখার মতো জঘন্য অমানবিকতা দেখায়। খুনিরা এখানেই ক্ষান্ত না হয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার দ্বিতীয় অপচেষ্টা চালাতে থাকে। একই অংশ হিসেবে জাতির সবচেয়ে বিয়োগান্তক ঘটনার দিনে বেগম খালেদা জিয়া তার ভুয়া জন্মদিনের তারিখ নির্ধারণ করে পৈশাচিক উল্লাস প্রদর্শন করতে থাকে। বেগম খালেদা জিয়ার দুই উপদেষ্টা অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ ও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বারবার প্রকাশ্যে নিষেধ করা সত্ত্বেও বেগম জিয়া ও বিএনপি ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালনের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করে বেগম জিয়ার আত্মাটা বাংলাদেশ ও বাঙালির আত্মা না, পাকিস্তানি প্রেতাত্মা। সাবেক তথ্যমন্ত্রী বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বঙ্গবন্ধু হত্যার জঘন্য রাজনীতি বিএনপি-জামায়াতসহ কতিপয় দল এবং তথাকথিত কিছু বুদ্ধিজীবী এখনো বহন করে চলেছে। এরা দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে দেওয়ার অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করার ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের রাজনীতি করে চলেছে। এরা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের শত্রু, এরা বাংলাদেশের জন্য বিপদ, হুমকি এবং বিষবৃক্ষ। পাকিস্তান পন্থার রাজনীতিকে পরাজিত করার পাশাপাশি দুর্নীতি-লুটপাট-দলবাজি-ক্ষমতাবাজির অবসান করে সুশাসনের পথে এগোতে পারলেই বঙ্গবন্ধু স্বমহিমায় জাগরূক থাকবেন।

সর্বশেষ খবর