মঙ্গলবার, ১৭ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা
কী হবে বাংলাদেশের ভূমিকা

বাড়তি নিরাপত্তা সতর্কতা ও নজরদারি প্রয়োজন

মোহাম্মাদ আলী শিকদার

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাড়তি নিরাপত্তা সতর্কতা ও নজরদারি প্রয়োজন

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মাদ আলী শিকদার মনে করেন, তালেবানদের পুনরুত্থান বিশ্বের ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব বিস্তার করবে। বাংলাদেশের ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে বিভিন্নভাবে। তাই এখনই বাংলাদেশের বাড়তি নিরাপত্তা সতর্কতা ও নজরদারি শুরু করা প্রয়োজন। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন। মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, আফগানিস্তানের তালেবানদের জয় মূলত পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের জয়। এটা আমার কথা নয়, এটা পাকিস্তানের সাবেক সামরিক গোয়েন্দা প্রধান জেনারেল হামিদ গুলের কথা। তিনি পাকিস্তানের একটি টকশোয় বলেছিলেন, আফগানিস্তানের ইতিহাসে লেখা থাকবে পাকিস্তানের আইএসআই কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা নিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নকে পরাস্ত করেছিল। আবার এটাও লেখা থাকবে যে, আমেরিকার সহায়তা নিয়ে আইএসআই কীভাবে আমেরিকাকেই তাড়িয়ে দিয়েছিল। হামিদ গুলের এ কথাগুলো ১৬ জানুয়ারি ২০২১ নিউইয়র্ক টাইমসে বিস্তারিতভাবে এসেছে। আর পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার ঘোষিত নীতিতে এখনো ভারত ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার কথা আছে। তাদের প্রতিশোধের ধরন বাংলাদেশ দেখেছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময় এবং ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তাদের জঙ্গি তৎপরতার মাধ্যমে। তিনি বলেন, তালেবানের পুনরুত্থানে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মৌলবাদীরা স্বাভাবিকভাবেই উল্লসিত হবে। কারণ এসব সংগঠনের নেতারা এক সময় আফগানিস্তান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছে। এক সময় সেখান থেকে তারা অস্ত্র, অর্থ পেয়েছে। এর অনেক দালিলিক প্রমাণও আছে।

বাংলাদেশের এখন বিশেষভাবে বাড়তি নিরাপত্তা সতর্কতা ও নজরদারির প্রয়োজন উল্লেখ করে মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, বাংলাদেশের মূলত তিনটি বিষয় মনে করা প্রয়োজন। প্রথমত, দেশের সব প্রবেশ ও বহির্গমন মুখে কঠোর নজরদারি দরকার। সন্দেহজনকদের চলাচল পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাইবার স্পেসে মনিটরিং দরকার। কারণ, মৌলবাদীদের যেকোনো কাজে সাইবার স্পেস ব্যবহার হবে। তৃতীয়ত, প্রশাসনের ভিতরে ঘাপটি মেরে থাকা অনুচরদের খুঁজে বের করা দরকার। কারণ, বিগত সময়ে বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক ব্যক্তিদের এভাবে শর্ষের ভিতরে ভূত হয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে। তাদের মনিটরিংয়ে আনতে হবে, যেন নতুন করে যোগসাজশ না করতে পারে। এসব ব্যবস্থা নেওয়া হলে আমরা বড় ধরনের কোনো আশঙ্কায় পড়ব না বলে মনে করেন এ নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

সর্বশেষ খবর