বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

শিক্ষার্থী শিক্ষাঙ্গনে ফিরলে কমবে সহিংসতা : ইউনিসেফ

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষার্থী শিক্ষাঙ্গনে ফিরলে কমবে সহিংসতা : ইউনিসেফ

মহামারীতে দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষার স্তর পর্যন্ত বাংলাদেশে ৪ কোটির বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। মঙ্গলবার জাতিসংঘ শিশু তহবিলের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যত বেশি সময় শিশুরা স্কুলের বাইরে থাকবে সহিংসতা, শিশুশ্রম ও বাল্যবিয়ের ঝুঁকির কারণে তাদের স্কুলে ফেরার সম্ভাবনা তত কমে যাবে। ক্লাসে ফিরলে সহিংসতা কমবে। ইউনিসেফ দ্রুত স্কুলগুলো খুলে দিতে এবং শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহায়তার জন্য বিস্তৃত পরিসরে পদক্ষেপ নিতে সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কভিড-১৯-এর কারণে যেসব দেশে দীর্ঘ সময় ধরে স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ দ্বিতীয় বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ। দীর্ঘ সময় সরাসরি পাঠদান বন্ধ থাকলে তা পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুদের স্বাস্থ্য, সুরক্ষা ও মনস্তাত্ত্বিক সুস্থতার ওপর ‘অত্যন্ত গুরুতর প্রভাব ফেলে’ বলে সতর্ক করেছেন বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি টোমো হোজুমি। ইউনিসেফের প্রতিবেদনে তিনি বলেন, ‘প্রান্তিক শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, যা তাদের অধিক দারিদ্র্য ও অসমতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও দেবে। নিরাপদে স্কুল পুনরায় খুলে দেওয়া এবং সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পড়াশোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিনিয়োগ করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের আজকের এ সিদ্ধান্ত এই শিশুদের পুরো জীবনকে প্রভাবিত করবে।’ সরাসরি পাঠদান বন্ধ থাকলেও সরকার অনলাইন ও টেলিভিশনে শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে ইন্টারনেট ও ডিভাইস না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী যে এর বাইরে থাকছে তা বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে। ইউনিসেফ বলছে, বিশ্বব্যাপী দেশগুলো দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রদানের জন্য কিছু পদক্ষেপ নিলেও প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের কমপক্ষে ২৯ শতাংশের কাছে এ শিক্ষা পৌঁছানো যাচ্ছে না। সংস্থাটি মনে করে উপকরণের ঘাটতি, সর্বকনিষ্ঠ শিশুদের প্রযুক্তি ব্যবহারের সহায়তা এবং শিক্ষার জন্য মানসম্পন্ন পরিবেশের অভাব, গৃহস্থালির কাজ করার চাপ অথবা কাজ করতে বাধ্য হওয়া এর কারণ হতে পারে। বিশ্বের সবচেয়ে অসহায় শিশুদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে রয়েছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ শিক্ষা সংকট যাতে শিক্ষা বিপর্যয়ের দিকে না যায় সেজন্য যত দ্রুত সম্ভব স্কুল খুলে দিতে প্রচারাভিযান চালানো হবে। নিরাপদে স্কুল খোলার লক্ষ্যে ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়। এ কর্মযজ্ঞের অংশ হিসেবে নির্দেশিকা তৈরি করা হচ্ছে যাতে শিশু ও শিক্ষকরা মাস্ক পরে, সাবানপানিতে হাত ধুয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিরাপদে স্কুল শুরু করতে পারেন। ইউনিসেফ শিশু, অভিভাবক ও শিক্ষকদের সঙ্গেও যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে নিরাপদে স্কুল খুলে দেওয়ার বিষয়ে সবার মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর