সোমবার, ৩০ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশ

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেছেন, বাংলাদেশ এখন আর ছোট নয়, বড় ও শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ। ভারত সব সময় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহযোগী হিসেবে কাজ করে। দুই দেশের ইতিহাস যেমন একই, তেমনি একই রকম সম্পৃক্ততা রয়েছে আমাদের।

গতকাল রাজধানীর গুলশানে  ভারতীয় হাইকমিশনে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও সংযোগ, ত্বরান্বিত প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধ অংশীদার শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে সেমিনারে ভারতীয় হাইকমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে ভারত বিভিন্ন ভূমিকা রাখছে। দুই যোগাযোগ খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করছে ভারত। বাংলাদেশের নদীপথ উন্নয়নে ভারত সহায়তা করছে। নদী শাসনের জন্য বৃহৎ ভেসেল, ড্রেজার দিয়েছে। এসব ভেসেল ও ড্রেজার দিয়ে অভ্যন্তরীণ নদীর নাব্যতা, নদীপথ রক্ষায় কাজ করছে। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে বৃহৎ বিদ্যুৎ প্রকল্প রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট সবচেয়ে দ্রুত বাস্তবায়নের প্রকল্প। এই প্রকল্প বাংলাদেশে উন্নয়নে বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে। সড়ক যোগাযোগ খাতে বৃহৎ প্রকল্প আশুগঞ্জ-সরাইল-দারখার-আখাউড়া সড়ক প্রকল্প। এই প্রকল্প বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে। দোরাইস্বামী বলেন, শুধু সড়ক ব্যবস্থা নয় যাত্রী পরিবহনের জন্য ১ হাজার সিঙ্গেল ও ডাবল ডেকার বাস দেওয়া হয়েছে। পণ্য পরিবহনের জন্য ৫০০ ট্রাক দেওয়া হয়েছে। এসব বিনিয়োগে বাংলাদেশে বর্তমানে এফডিআই বা বৈদেশিক বিনিয়োগে ভারতের অবদান আগের যে কোনো সময়ের  চেয়ে বেশি। তিনি আরও বলেন, ভারতে বাংলাদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুণ। গত পাঁচ বছরে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। পাশাপাশি আমদানির পরিমাণ বেড়েছে। এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি রপ্তানি করে ভারতে। শূন্য শুল্কে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি সুবিধা দুই দেশের বাণিজ্যকে আরও উচ্চতায় নিয়ে এসেছে। ভবিষ্যতে দুই দেশের বাণিজ্য, অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরও বেশি প্রবৃদ্ধি হবে। যা দুই দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। ভারত যেমন বৃহৎ উন্নয়নশীল দেশ তেমনি বাংলাদেশ এখন ১৭০ মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ। এত বিপুল মানুষের দেশ একটি বড় অর্থনীতির দেশেই পরিণত হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ : এদিন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। সাক্ষাতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত মুজিবনগর সরকারের স্মৃতিবিজড়িত কলকাতার থিয়েটার রোডের ৮ নম্বর বাড়ি বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের অনুরোধ জানানো হয়। এ ছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের বৃত্তি, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা, মুজিবনগরে স্বাধীনতা সড়ক নির্মাণ বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। মন্ত্রী এ সময়  মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সরকার এবং জনগণের সহায়তার কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবনদানকারী মিত্রবাহিনীর ভারতীয় কিছু সদস্যকে বাংলাদেশ সরকার সম্মাননা দিয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বাকি সদস্যদের সম্মাননা দেওয়ার সময় ঠিক করতে হাইকমিশনারকে অনুরোধ করেন। ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক পরীক্ষিত। মিত্রবাহিনীর সদস্যদের সম্মাননা প্রদান বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ করবে। আগামী ৬ ডিসেম্বর (ভারত কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান দিবসে) মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী ভারতের মিত্রবাহিনীর সদস্যদের সম্মাননা দেওয়া যেতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ভারতীয় হাইকমিশনার এ সময়  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ণ উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতীয় জনগণও বঙ্গবন্ধুকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করেন।

সর্বশেষ খবর