মঙ্গলবার, ৩১ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

নতুন সিলেবাসে প্রস্তুতি সম্পন্ন এসএসসি-এইচএসসির

আকতারুজ্জামান

চলতি বছরের নভেম্বরে এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা সামনে রেখে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডগুলো। সরকারের পক্ষ থেকে পরীক্ষার জন্য আবশ্যিক সব বিষয় বাদ দিয়ে মাত্র তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয় নির্ধারিত করে দেওয়ার পর এ সিলেবাস অনুসরণ করেই নেওয়া হচ্ছে প্রস্তুতি। এ লক্ষ্যে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে ছাপাকাজ শেষ করে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রশ্ন ট্রেজারিতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে বিজি প্রেস। শিক্ষা বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি অনুকূল হলে আগামী নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসএসসি ও সমমান এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে ১৫ জুলাই ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তবে সার্বিক বিবেচনায় চলতি বছরের পরীক্ষার সিলেবাস থেকে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, আইসিটি ও ধর্ম বিষয় বাদ দেওয়া হয়। বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার্থীদের শুধু গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয় পরীক্ষার জন্য সিলেবাসে রাখা হয়েছে। বর্তমানে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের এ নৈর্বাচনিক তিন বিষয়ের ওপরই অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সে হিসেবে আবশ্যিক বিষয়গুলো অধ্যয়নের বাইরে থাকবে এদের। যদিও এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য হচ্ছে, আবশ্যিক বিষয়গুলো শিক্ষার্থীরা আগের ক্লাসগুলোয় পড়েছে। এ বিষয়গুলো আগে পাবলিক পরীক্ষায় মূল্যায়ন করা হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রতি সপ্তাহে দুটি করে ২৪টি এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রতি সপ্তাহে দুটি করে ৩০টি অ্যাসাইনমেন্ট করতে হবে। করোনা পরিস্থিতি অনুকূল হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্ধারিত সময় ও নম্বর কমিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে।

প্রশ্নের ধরন ও পরীক্ষার সময় প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পরীক্ষার সময় হবে অর্ধেক। তিন ঘণ্টার স্থলে পরীক্ষা হবে দেড় ঘণ্টার। প্রশ্নপত্র আগের মতো বহু নির্বাচনী ও রচনামূলকই থাকবে। তবে এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন বাছাইয়ের বেশি সুযোগ পাবে। আগে যেখানে ১০টি প্রশ্নের মধ্য থেকে আটটির উত্তর দিতে বলা হতো, সেখানে এখন হয়তো সেই ১০টি প্রশ্নই থাকবে। তবে এর মধ্যে তিনটি বা চারটি প্রশ্নের উত্তর দিতে বলা হবে। অর্থাৎ পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন বেছে নেওয়ার অপশন বেশি থাকবে। প্রতি বিষয়ে মোট নম্বর ১০০-এর বদলে ৫০ করা হবে। এ ৫০ নম্বরকে ১০০-তে রূপান্তর করে পরীক্ষার ফল দেওয়া হবে।

এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি সম্পর্কে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির সভাপতি, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ গতকাল প্রতিবেদককে বলেন, ‘যে কোনোভাবে আমরা চলতি বছরের এসএসসি-এইচএসসির পরীক্ষা নিতে চাই। পরীক্ষা ছাড়া মূল্যায়ন করে অটো পাসের অপবাদ শিক্ষার্থীদের দিতে চাই না। পরীক্ষা নেওয়ার লক্ষ্যে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস দেওয়া হয়েছে। সেই সিলেবাস ধরে অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম চলছে। তা ছাড়া পরীক্ষার জন্য প্রশ্নপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এসএসসির প্রশ্ন ছাপা শেষ করে ট্রেজারিতে পাঠানো হয়েছে। এইচএসসির প্রশ্ন ছাপা কাজ চলছে।’

শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানান, চলতি বছরে এসএসসি পরীক্ষার জন্য ২৩ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী ফরম পূরণ করেছে। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় বসতে এখন পর্যন্ত ১৪ লাখের বেশি ছাত্রছাত্রী ফরম পূরণ করেছে। বোর্ডের ঘোষণা অনুযায়ী আজ ফরম পূরণের সময় শেষ হবে। তবে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফরম পূরণের ফি পরিশোধ করতে পারবে শিক্ষার্থীরা।

নেহাল আহমেদ আরও জানান, এসএসসি-এইচএসসিতে আবশ্যিক বিষয়গুলোর পরীক্ষা না হওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়া সহজ হবে। কারণ সব শিক্ষার্থীর এক দিনে পরীক্ষা থাকবে না। বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের পরীক্ষা আলাদা থাকবে। পরীক্ষার কেন্দ্রে আসনবিন্যাস কেমন থাকবে- এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, কেন্দ্রপ্রধানরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন।

প্রসঙ্গত, প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি ও এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষার আয়োজন করে সরকার। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছরের এইচএসসিতে পরীক্ষা ছাড়াই মূল্যায়ন করে ফল দেওয়া হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় চলতি বছরও এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।

সর্বশেষ খবর