শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে আনন্দদায়ক শিক্ষা জরুরি

-এহছানুল হক মিলন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে আনন্দদায়ক শিক্ষা জরুরি

সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন বলেছেন, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরিয়ে আনতে আনন্দদায়ক শিক্ষা জরুরি। খেলাধুলা, টিফিনের ব্যবস্থা, চিত্তবিনোদনের জন্য সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও মেয়েদের জন্য উপবৃত্তি বাড়িয়ে দিতে হবে। সম্পূর্ণ ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষায় দীক্ষিত করতে বিশেষ উপবৃত্তির ব্যবস্থা করা জরুরি। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপকালে এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইআরআই) চেয়ারম্যান এহছানুল হক মিলন এসব কথা বলেন। আলাপচারিতায় বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ড. মিলন বলেন, আজকের দিনে স্কুল-কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটে আনন্দের সঙ্গে। সর্বগ্রাসী করোনা পৃথিবীর মাত্র ১৪টি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা স্থবির করে দিয়েছে। তার মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ বাংলাদেশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ৫ শতাংশের নিচে সংক্রমণ থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যেতে পারে। এর মধ্যে ১৮ বছর বয়সের নিচে সংক্রমণের হার দশমিক ০০০২%। তাছাড়া বাংলাদেশের বৃহৎ কয়েকটি শহর ছাড়া প্রায় অধিকাংশ উপজেলায় সংক্রমণ নেই বললেই চলে। সে ক্ষেত্রে সরকার এলাকাভিত্তিক ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে পারত। এমনকি ছুটির দিনগুলোতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যেত। সাবেক এই শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া, সরকার ঘোষিত ভ্যাসকসিন প্রাপ্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তড়িঘড়ি করে বিনা প্রস্তুতিতে নভেম্বরে এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া অটো পাসেরই নামান্তর। সময় বাড়িয়ে দিয়ে স্বল্প সিলেবাসে প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা নেওয়া সমীচীন হবে। তিনি বলেন, বিকল্প দিনগুলোতে একেক দিন একেকটি শ্রেণির ক্লাস নেওয়া যেত। গ্রামবাংলায় উন্মুক্ত জায়গায় বৃক্ষের ছায়াতলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ক্লাস নেওয়া যেত। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা উপকেন্দ্র বাড়িয়ে দেওয়া উচিত ছিল। গত শিক্ষা বাজেটে প্রণোদনার মাধ্যমে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস বা অ্যান্ড্রয়েড ফোন শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার সক্ষমতা, স্বল্প আয় থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ। ইন্টারনেটের গতি বাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের সাশ্রয়ী মূল্যে অথবা বিনা মূল্যে ইন্টারনেট দেওয়া যেত। এ ক্ষেত্রে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিশ্বের ইন্টারনেট গতির তালিকায় ১৩৭টি দেশের মধ্যে ১৩৫তম থেকে এগিয়ে আসতে পারত। ১৯৭১ সালে ৯ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় স্বাধীনতার পর সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা, অটো প্রমোশনের তিক্ত অভিজ্ঞতাকে স্মরণে রেখে এবারে করোনাকালীন অটো প্রমোশন বা শুধু ঐচ্ছিক বিষয়ে পাবলিক পরীক্ষা নেওয়া কোনো মতেই সমীচীন নয়। করোনাকালীন ছুটির সময়ে বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের দ্বারা সংক্ষিপ্ত সিলেবাস করা যেতে পারত। ড. মিলন আরও বলেন, চিকিৎসকরা বলে থাকেন, সূর্যরশ্মি থেকে ভিটামিন ডি গ্রহণে খানিকটা হলেও করোনা প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। সেটি আবার দুপুরের কড়া রোদে নিতে হবে। ছাদে উঠে দেখতে পেলাম কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্লে গ্রুপ থেকে প্রাথমিক পর্যায়ের বেশ কিছু শিক্ষার্থী স্কুলের ড্রেস পরে কাঁধে বইয়ের ব্যাগ নিয়ে খেলাধুলা করছে। পাশে দাঁড়ানো বাড়ির কেয়ারটেকারের কাছে জানতে চাইলাম, স্কুল খোলা কি-না? উত্তরে বলল, ঘরে থাকতে তারা অস্বস্তিবোধ করে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর