সোমবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ভারতে রিমান্ডে পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল

সাময়িক বরখাস্ত, ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতে রিমান্ডে পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল

সোহেল রানা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে আটক বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ভারতীয় পুলিশ। অনুপ্রবেশের দায়ে দায়ের করা মামলায় কোচবিহার পুলিশ তাকে রিমান্ডে নেয়। তাকে ব্যাপক জেরা করা হচ্ছে। এদিকে পরিদর্শক সোহেল রানাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। গতকাল গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সোহেলকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেহেতু ভারতে মামলা হয়েছে, মনে হয় না খুব সহজ হবে। আমাদের দেশেও মামলা হয়েছে, সে মামলায় তাকে প্রয়োজন এটা বলে তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। এটা বলে আনা না গেলে সেখানে বিচার শেষ হলে ফিরিয়ে আনতে হবে। সোহেল রানার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হয়েছে। এখন মামলার তদন্ত হবে, আদালতে এই মামলার বিচার হবে। তিনি পলাতক এই মর্মে রিপোর্ট পেলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ অনুপ্রবেশের অভিযোগে শুক্রবার সোহেল রানাকে আটক করা হয়েছে বলে ‘উত্তরবঙ্গ সংবাদ’ নামে ভারতের স্থানীয় একটি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। আটক অবস্থায় তার একটি ছবিও প্রকাশ করেছে ওই গণমাধ্যম।

নর্থ বেঙ্গল বিএসএফের ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকেও  সোহেল রানাকে আটকের খবরের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা টুইটে লিখেছে, অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন পরিদর্শককে আটক করা হয়েছে। বিএসএফের একটি দল সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তাকে আটক করে। গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতে অভিযুক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের সাবেক মালিক সোনিয়া মেহজাবিনের ভাই পুলিশ কর্মকর্তা শেখ সোহেল রানা। ই-অরেঞ্জের বর্তমান মালিক বীথি আক্তার। সোহেল রানা ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক বলে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমের খবরে উঠে এসেছে। ১৭ আগস্ট অগ্রিম অর্থ পরিশোধের পরও মাসের পর মাস পণ্য না পাওয়ায় ই-কমার্স প্ল্যাটফরম ই-অরেঞ্জের মালিক ও কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রায় ১১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছেন গ্রাহকরা। ওই মামলায় ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, আমানউল্লাহ, বীথি আক্তার, কাউসার আহমেদ এবং বনানী থানার পরিদর্শক শেখ সোহেল রানার নাম উল্লেখ করা হয়। এদিকে পুলিশের সূত্রগুলো বলেছে, সোহেল রানার বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা দায়ের করা হলে তিনি পালানোর পরিকল্পনা আঁটেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার থানায় ডিউটি করেই বেরিয়ে যান তিনি। তার গন্তব্য ছিল নেপাল। নেপালে তার অসংখ্য ব্যবসা রয়েছে। কিন্তু ভারত-নেপাল সীমান্তে তিনি ধরা পড়ে যান।

সোহেল রানা বরখাস্ত : পালিয়ে ভারতে গিয়ে ধরা পড়া বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার আসাদুজ্জামান।

গতকাল গণমাধ্যমে তিনি জানান, ভারতে অনুপ্রবেশের পর গ্রেফতারের খবর সে দেশের পত্রপত্রিকাসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়া ছাড়াও নিজ কর্মস্থলে অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিতির কারণে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রানার বিরুদ্ধে একটি নিয়মিত মামলাও হয়েছে, যা তদন্ত করা হবে। তার বিরুদ্ধে আর কোনো অভিযোগ আছে কিনা সেটাও আমরা খতিয়ে দেখে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর