বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কর্মকর্তাদের স্যার-ম্যাডাম বলার রীতি নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

কর্মকর্তাদের স্যার-ম্যাডাম বলার রীতি নেই

সরকারি কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ বা ‘ম্যাডাম’ বলতে হবে এমন কোনো রীতি নেই বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্ব্যবহার দুর্নীতির শামিল। গতকাল সচিবালয়ে সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত এক সংলাপে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া। এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্যার শব্দের বাংলা অর্থ মহোদয়। রুলস অব বিজনেসে এটা নেই। স্যার বা ম্যাডাম সম্বোধন করতে হবে এমন কোনো রীতি নেই। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার নির্দেশনা ছিল- “যারা সেবা নিতে আসেন তাদের দিকে তাকাও, তারা তোমার বাবার মতো, ভাইয়ের মতো, আত্মীয়ের মতো। সেবা নিতে আসে জনগণ। তাদের টাকায় তোমাদের বেতন হয়।” বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা আমরা বাস্তবায়ন করতে চাই। বিভাগীয় কমিশনার থেকে মাঠ প্রশাসনকে আমরা সে নির্দেশনাই দিই।’

কর্মকর্তাদের আচরণের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, হাসিমুখে সেবা দেওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। দুর্ব্যবহার দুর্নীতির শামিল। এটা কখনো করা যাবে না। আইনের মধ্যে থেকে সাধ্যমতো সেবা দেওয়ার মনোভাব থাকতে হবে। কর্মকর্তারা যেন এটি মেনে চলেন। আপনার আচরণ থাকবে আইনের মধ্যে থেকে সাধ্যমতো সেবা দেওয়া। সে ক্ষেত্রে আপনার আচরণ সরকারের আচরণ। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে চলতি ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রশাসন ক্যাডারের ৫৫ জন কর্মকর্তাকে বিভিন্ন অভিযোগে লঘু ও গুরু দন্ড দেওয়া হয়েছে। শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আরও ৪৯টি মামলা চলমান আছে। এ সময়ের মধ্যে প্রশাসনে ১ লাখ ৪০ হাজার ৮৬০টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে বলেও জানান ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘ক্যাডার সার্ভিসের ৫ হাজার ৭৪৪ জনকে দেশে ও ৪৭৭ কর্মকর্তাকে বিদেশে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আমরা দক্ষ, জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে রাজনীতিবিদদের মতানৈক্য বাড়ছে কি না- জানতে চাইলে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘বরিশালে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। করোনার মধ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। অত্যন্ত আন্তরিকভাবে জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তারা কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা বেশি জনমুখী হয়েছি। দু-এক জায়গায় যে ঘটনা ঘটেছে, তদন্ত করে বিষয়গুলো বোঝার চেষ্টা করছি।’ অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘রাইট ম্যান রাইট প্লেস নীতির আওতায় প্রশাসনে যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মকর্তাদের সঠিক স্থানে পদায়নে ডাটাবেজ করা হচ্ছে। আমরা ট্রেনিং ম্যানেজমেন্ট প্রস্তুত করছি। সব ক্যাডার ও সরকারের উপসচিব এবং এর ওপরের কর্মকর্তাদের জন্য কর্মজীবন পরিকল্পনা নীতি প্রণয়ন করতে যাচ্ছি।’ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আপনি আপনার সম্পদের হিসাব দেবেন কি না- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই। স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতার জন্য আমরা আগামী থেকে সবাই, কর্মকর্তারা এবং নির্বাহী বিভাগের প্রধান যেমন আমাদের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা সবাই কিন্তু এ জিনিসটা দেব।’

সর্বশেষ খবর