বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনা হাসপাতালে শয্যা ফাঁকা

৮৫ শতাংশ শয্যায় রোগী নেই, প্রতিদিনই কমছে নতুন আক্রান্ত

জয়শ্রী ভাদুড়ী

করোনা হাসপাতালে শয্যা ফাঁকা

রোগীশূন্য হয়ে পড়ছে কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলো। গতকাল সারা দেশে করোনা হাসপাতালের সাধারণ শয্যার ৮৫ শতাংশ এবং নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের শয্যা (আইসিইউ) ৬২ শতাংশই ফাঁকা ছিল। শনাক্তের হার কমে আসায় হাসপাতালে কমেছে রোগীর চাপ।

দেশে প্রতিদিনই কমছে করোনা শনাক্তের নমুনা টেস্টের সংখ্যা। গতকাল টেস্ট হয়েছে ৩১ হাজার ৭২৪টি। করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৭৪ জনের। সংক্রমণ হার ছিল ৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ। ধীরে ধীরে কমছে সংক্রমণ হার। কমছে মৃত্যু হারও। গতকাল মারা গেছেন ৩৫ জন। মৃত্যু হার ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ২০ হাজার ৭৬৫ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২ হাজার ৭৪ জন। যা বর্তমানে চিকিৎসাধীন রোগীর ১০ শতাংশ। বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১৮ হাজার ৬৯১ জন অর্থাৎ ৯০ শতাংশ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন বাড়িতে। হাসপাতালে শয্যা ফাঁকা থাকলেও যাচ্ছেন না রোগীরা। রাজধানীর সরকারি হাসপাতালে ৭১ শতাংশ সাধারণ শয্যা ফাঁকা, আইসিইউ শয্যা ফাঁকা ৫২ শতাংশ। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘হাসপাতালে করোনা রোগীর চাপ কমে এসেছে। আইসিইউ এর চাপও কমেছে। প্রতিদিন ২০-৩০ জন সংকটাপন্ন রোগী ভর্তি হয় এই হাসপাতালে। আইসিইউয়ের জন্য প্রতিদিন দু-তিনজন যোগাযোগ করেন। আমরা প্রয়োজন মতো শয্যার ব্যবস্থা করতে পারছি। মৃত্যু হারও অনেক কমে এসেছে। প্রতিদিন ৪৬০-৪৮০ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকে।’  গতকাল কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে ১৬৯টি শয্যার মধ্যে ১২৮টি শয্যাই ফাঁকা, ২৬টি আইসিইউ এর মধ্যে ফাঁকা ১৩টি। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৭৫টি সাধারণ শয্যার মধ্যে ফাঁকা ৯০টি। এই হাসপাতালে শয্যার চেয়েও বেশি রোগী ভর্তি ছিল গত মাসে। ১০টি আইসিইউ তে রোগী ভর্তি আছে। শেখ রাসেল গ্যাসট্রোলিভার হাসপাতালে ১৭৪টি শয্যার মধ্যে ১৬২টি ফাঁকা, ১৬টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ১৩টি ফাঁকা। সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে ৯০টি শয্যার মধ্যে ৮১ শয্যা ফাঁকা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৮৭টি শয্যার মধ্যে ১৪৯টি শয্যা ফাঁকা। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৭৫টি শয্যার মধ্যে ৬৪টি ফাঁকা। জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে ২০১টি শয্যার মধ্যে ১৮০টি শয্যা ফাঁকা। রাজধানীর সরকারি হাসপাতালে তিন হাজার ৯৬২টি শয্যার মধ্যে ২ হাজার ৮০৮টি শয্যা ফাঁকা, ৩৮২টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ১৯৮টি ফাঁকা। ৪২৫টি এইচ ডিইউ শয্যার মধ্যে ২৫৯টি শয্যা ফাঁকা। রাজধানীর বেসরকারি হাসপাতালে ১ হাজার ৬৩০ শয্যার মধ্যে ১ হাজার ২৯৯ শয্যা ফাঁকা। আইসিইউ শয্যা ৪৬৭টির মধ্যে ৩৯৭টি ফাঁকা। 

জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য এবং বিএসএমএমইউ’র সাবেক উপাচার্য ডা. নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে টেস্ট বাড়ানো, টিকা দেওয়া এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। টেস্ট করে আক্রান্তদের আলাদা করতে হবে। তাহলে একজন থেকে একাধিক ব্যক্তি করোনা সংক্রমিত হতে পারবেন না। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি ধীরে ধীরে কমছে টেস্টের সংখ্যা। টেস্ট কম হলে আক্রান্ত, পিক টাইম কিংবা ওয়েভ সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া সম্ভব নয়।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর