বৃহস্পতিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

দুই ধাপে টিকার আওতায় দেড় কোটি মানুষ

মঙ্গলবার এক দিনে টিকা দেওয়া হয়েছে ৬৬ লাখ ২৫ হাজার ১২৩ জনকে।

জয়শ্রী ভাদুড়ী

দুই ধাপে টিকার আওতায় দেড় কোটি মানুষ

বনানীর কড়াইলে একটি স্কুলে গতকাল টিকার প্রথম ডোজের জন্য দীর্ঘ লাইন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নিয়মিত টিকাদানের বাইরে শুধু দুই ধাপের ক্যাম্পেইনে টিকা নিয়েছেন দেড় কোটির বেশি মানুষ। গত মঙ্গলবার এক দিনে টিকা দেওয়া হয়েছে ৬৬ লাখ ২৫ হাজার ১২৩ জনকে। ৭৫ লাখের লক্ষ্যপূরণে গতকালও চলেছে টিকা দান। এর আগে আগস্টে ছয় দিনে টিকা নিয়েছেন ৫০ লাখ ৭৩ হাজার ৪০ জন মানুষ।

এবারের ক্যাম্পেইনে নারীদের টিকাদানে রেকর্ড তৈরি হয়েছে। পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি টিকা নিয়েছেন। গতকাল ৩১ লাখ ৬৯ হাজার ৬২২ জন পুরুষ টিকা নিয়েছেন, ৩৪ লাখ ৫৫ হাজার ৫০১ জন নারী টিকা নিয়েছেন। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা দেওয়া হয়েছে ৩৯ হাজার ১১১ জনকে, ফাইজার দেওয়া হয়েছে ১১ হাজার ২৮৭ জনকে, সিনোফার্ম দেওয়া হয়েছে ৬৫ লাখ ৬৯ হাজার ৭৮২ জনকে, মডার্না দেওয়া হয়েছে ৪ হাজার ৯৪৩ জনকে। টিকা গ্রহীতাদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে ২৮ অক্টোবর।

এ ব্যাপারে ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক বলেন, ‘গত মঙ্গলবার ক্যাম্পেইনে ৬৭ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল স্বাভাবিক টিকাদানসহ ৮০ লাখ। সে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আজ সকাল ৯টা থেকে বিশেষ ক্যাম্পেইন চলেছে। আমরা আশা করছি টিকা ক্যাম্পেইনের লক্ষ্য পূরণ করতে পারব।’

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে টিকা দেওয়ার টার্গেট ছিল ৮৬ হাজার ২৫০ ডোজ। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬ হাজার ২৫০ জন। এক দিনে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ২৮ হাজার ৭০২ ডোজ টিকা দিয়েছে ডিএসসিসি। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৮৭৫ জন পুরুষ এবং ১২ হাজার ৮২৭ জন নারীকে টিকা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের টার্গেট ছিল ৬০ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়া। এর মধ্যে প্রথম দিনে টিকা দেওয়া হয়েছে ২৮ হাজার ৫০০ জনকে। গতকাল দুপুর আড়াইটা থেকে বিকাল পর্যন্ত টিকা দিয়েছে ডিএনসিসি। ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল বাসার মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের দুই দিনে ৫৪টি ওয়ার্ডে ৬০ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য ছিল। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ৭-১২ আগস্ট ছয় দিনে ৫০ লাখ ৭৩ হাজার ৪০ জন মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছিল। ৩২ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। গণটিকাদান কর্মসূচির আওতায় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৮ লাখ ৭৩ হাজার ৪০ জন বেশি মানুষ প্রতিষেধকটি নিয়েছিলেন। টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে পুরুষ ২৭ লাখ ৬৯ হাজার ৩৪১ এবং নারী ছিলেন ২৩ লাখ ৩ হাজার ৬৯৯ জন। অর্থাৎ পুরুষের টিকা গ্রহণের হার ৫৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং নারীদের ৪৫ দশমিক ৪২ শতাংশ।

অণুজীব বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘কভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে বিপুল জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনা একটি বাস্তবমুখী পদক্ষেপ। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে এই ধরনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। নারীদের টার্গেট করে টিকা দেওয়া খুব জরুরি ছিল। কারণ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে নারী মৃত্যু অনেক বেড়েছে। বয়স্ক নারীদের অধিকাংশের ভিটামিন ডি অনেক কম থাকে। তাই তাদের টিকা দেওয়ায় আক্রান্ত ও মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাস পাবে। তিনি আরও বলেন, এবারের ক্যাম্পেইনে গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের টিকা দেওয়া হয়নি। এই জনগোষ্ঠীকে টিকা দিতে ক্যাম্পেইন নেওয়া যেতে পারে। কারণ তাদের দ্রুত টিকার আওতায় আনা জরুরি।’ চীনের সিনোফার্ম টিকার বড় চালানে এগিয়ে চলছে টিকা কর্মসূচি। ক্রয় চুক্তির আওতায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর সিনোফার্মের ৫০ লাখ ডোজ টিকা পেয়েছিল বাংলাদেশ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, ‘এখন পর্যন্ত সাড়ে ৫ কোটি ডোজ টিকা হাতে পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ৩ কোটি ১৫ লাখ ৬ হাজার ১৭ জন। দ্বিতীয় ডোজ ১ কোটি ৬৬ লাখ ৩৩ হাজার ৭৩৫ জন।

সর্বশেষ খবর