শনিবার, ২ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা
আসকের প্রতিবেদন

৯ মাসে ১৫৪ সাংবাদিক নির্যাতন ক্রসফায়ার ৪৮

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসের (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর-২০২১) মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত ঘটনা পর্যালোচনায় দেখা যায়, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এক সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এবং ১৫৪ সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হামলা-মামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। এ সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু, ক্রসফায়ার, গুলিবিনিময় বা বন্দুকযুদ্ধের মাধ্যমে অনেক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তাদের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে নারী শিশু নির্যাতন, সীমান্ত সংঘাত, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। ১০টি জাতীয়  দৈনিক ও বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদ ও আসক-এর নিজস্ব সূত্র থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে একজন সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এবং ১৫৪ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হামলা-মামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। নির্যাতিত সাংবাদিকদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটজন, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মীদের দ্বারা ১৪ জন, স্থানীয় পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১৩ জন, হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে ১৩ জন সাংবাদিক আহত হন। এ ছাড়া ১০৬ জন সাংবাদিক ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ও সন্ত্রাসীদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এদিকে গত ৯ মাসে প্রধান প্রধান জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে এবং ‘ক্রসফায়ারে’ মোট ৪৮ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে কথিত ‘ক্রসফায়ার’, বন্দুকযুদ্ধ, গুলিবিনিময় বা ‘এনকাউন্টারে’ নিহত হয়েছেন ৩৪ জন, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে ৯ জন ও নির্যাতনে চারজন মারা গেছেন। এ ছাড়া গ্রেফতারের পর হার্ট অ্যাটাকে (পুলিশের ভাষ্যমতে) একজনের মৃত্যু হয়। এ বছরের ৯ মাসে কারাগারে অসুস্থতাসহ বিভিন্ন কারণে মারা যান ৬৭ জন। এর মধ্যে কয়েদি ২৫ জন এবং হাজতি ৪২ জন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ বা গুমের শিকার হন ছয়জন। এর মধ্যে পরবর্তী সময়ে তিনজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এবং নিখোঁজ রয়েছেন আরও তিনজন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১০৮৫ নারী, যার মধ্যে একক ধর্ষণের শিকার হন ৮৭৯ জন এবং দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ২০৩ নারী। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হন ৩৯ জন এবং আত্মহত্যা করেছেন ৮ নারী। এ ছাড়া ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে ২৫৬টি। উল্লেখ্য, গত বছরের জানুয়ারি- সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে মোট ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন ৯৭৫ নারী। ৯ মাসে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ১০১ নারী, এর মধ্যে ১০ নারী আত্মহত্যা করেছেন এবং হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ নারী। এ ছাড়া যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৭১ জন পুরুষ, যার মধ্যে চারজন পুরুষ খুন হয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর