কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আরও তিন রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত মধ্য রাতে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের একটি টিম উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে জাকির আহমেদের ছেলে জিয়াউর রহমান (৩২) ও মৃত মকবুল আহমেদের ছেলে আবদুস সালামকে (২৯) আটক করে। গতকাল সকালে তাদের উখিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল বিকালে উখিয়া থানা পুলিশ শওকত উল্লাহ নামে একজনকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আটক করে। এর আগে শুক্রবার দুপুরে এপিবিএন সদস্যরা মোহাম্মদ সেলিম নামে অপর এক রোহিঙ্গা যুবককে আটক করেন। পরে তাকে উখিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত চার সন্দেহভাজন যুবককে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এর মধ্যে  গতকাল সন্ধ্যায় মোহাম্মদ সেলিম ও শওকত উল্লাহকে কক্সবাজার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে উখিয়া থানা পুলিশ। আজ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুই রোহিঙ্গার রিমান্ড শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন আদালতের পুলিশ পরিদর্শক চন্দন কুমার চক্রবর্তী। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছে।  বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহকে তার নিজ অফিসে ৫ রাউন্ড গুলি করে। এ সময় ৩ রাউন্ড গুলি তার বুকে লাগে। এতে তিনি ঘটনাস্থলে পড়ে যান। খবর পেয়ে এপিবিএন সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ‘এমএসএফ’ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার পর থেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জেলা পুলিশ ও এপিবিএন-এর টহল বাড়ানো হয়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন ১৪ এপিবিএন-এর অধিনায়ক পুলিশ সুপার নাঈমুল হক।  নিজ দেশ মিয়ানমারের আরাকানে ফিরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের দাবি-দাওয়া নিয়েই লড়ে আসছিলেন মুহিবুল্লাহ। ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট কুতুপালং শিবিরে রোহিঙ্গাদের বিশাল সমাবেশ করে তিনি আলোচনায় আসেন। পরবর্তীতে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর করে সে দেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও দেখা করেন। সেই থেকে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ আন্তর্জাতিকভাবেও আলোচনায় আসেন।