রবিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা
বিজ্ঞাপনযুক্ত বিদেশি চ্যানেল বন্ধ

অ্যাটকো ও সাংবাদিক সংগঠনের অভিনন্দন কোয়াবের হুঁশিয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে বিদেশি চ্যানেলের বিজ্ঞাপনযুক্ত অনুষ্ঠান সম্প্রচার বন্ধের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বেসরকারি টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স-অ্যাটকো ও সাংবাদিক সংগঠনগুলো। তবে ক্যাবল অপারেটরগুলো বলছে, সরকারের এমন  সিদ্ধান্তে সংকটের মুখে পড়ছেন তারা। আগামীকাল সোমবারের মধ্যে এই জটিলতার সমাধান করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ক্যাবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-কোয়াব।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গত ১ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে বিদেশি চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপনমুক্ত (ক্লিনফিড) সম্প্রচার কার্যকর করেছে সরকার। আইন বাস্তবায়নে মোবাইল কোর্টের অভিযান চলছে। ওই দিন থেকে বাংলাদেশে কোনো বিদেশি চ্যানেল দেখা যাচ্ছে না। এ নিয়ে গতকাল রাতে অ্যাটকোর এক ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংগঠনটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোজাম্মেল বাবু বলেন, সরকারের এ উদ্যোগ দেশি চ্যানেলগুলোকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সাহায্য করবে। বিজ্ঞাপনযুক্ত বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধের আইনটি ১৫ বছরের পুরনো। এটা বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা করা উচিত। এদিকে বিজ্ঞাপনমুক্ত বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচার বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়ায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে। গতকাল দুটি পৃথক বিবৃতিতে বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব আবদুল মজিদ এবং ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান।

তবে আগামীকাল সোমবারের মধ্যে ক্যাবল টিভি সংশ্লিষ্ট জটিলতার সমাধান করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ক্যাবল অপারেটরদের সংগঠন কোয়াব। গতকাল কারওয়ান বাজারে নিজস্ব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কোয়াব নেতারা বলেন, আমাদের সময় না দিয়েই মোবাইল কোর্টের অভিযান শুরু হয়েছে। ক্যাবল টেলিভিশন, ওটিটি, আইপি টিভি এবং ডিটিএইচ একই নীতিমালায় আনতে হবে। পুরো পদ্ধতিকে ডিজিটালাইজড করতে সময় লাগবে। ব্রডকাস্টারদের থেকে বিজ্ঞাপন ছাড়া চ্যানেল না পাওয়া পর্যন্ত গ্রাহকের বিনোদনের স্বার্থে বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচারের অনুমতি দিতে হবে। কোয়াব সভাপতি এস এম আনোয়ার পারভেজ বলেন, বাংলাদেশি ৩৫টি চ্যানেল নিয়ে আমাদের গ্রাহকদের ধরে রাখা কঠিন হবে। ক্লিনফিড দেওয়ার মালিক ব্রডকাস্টার বা  যে প্রোভাইড করে। তারা বলছে, এই মুহূর্তে ক্লিনফিড দিতে পারবে না। তাই ডিজিটালাইজেশনের বিষয়টি কমপ্লিট না হওয়া পর্যন্ত চ্যানেলগুলো পুনঃসম্প্রচারের অনুমতি চাই। এ ব্যাপারে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, যেসব চ্যানেল বিজ্ঞাপনমুক্ত ফিড দিচ্ছে সেগুলো চালাতে কোনো বাধা নেই। বিজ্ঞাপনসহ বিদেশি চ্যানেল চালানোর কারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ২ হাজার  কোটি টাকার মতো ইনভেস্টমেন্ট হয় না। সেটি থেকে দেশ বঞ্চিত হয়, মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি বঞ্চিত হয়, সাংবাদিকরাও বঞ্চিত হয়। সেই কারণে আমরা  যে পদক্ষেপ নিয়েছি সেটিকে টিলিভিশন মালিকদের সংগঠন, সম্প্রচার জার্নালিস্ট ফোরামসহ সবাই অভিনন্দন জানিয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আইনানুযায়ী বিদেশি চ্যানেলগুলো বাংলাদেশে কোনো বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারে না। একই আইন ইউরোপ আমেরিকা, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ উপমহাদেশের অন্য দেশগুলোতে আছে। সেই আইন  মেনেই সেখানে ভিনদেশি চ্যানেলগুলোকে সম্প্রচার করতে হয়। আমাদের  দেশে বছরের পর বছর আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিদেশি চ্যানেলগুলো বিজ্ঞাপনসহ সম্প্রচার করছে। বহুবার তাগাদা দিয়ে লাভ না হওয়ায় বিদেশি চ্যানেলের যারা এখানে প্রতিনিধি, ক্যাবল অপারেটর, টেলিভিশন মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম পয়লা অক্টোবর থেকে আমরা আইন কার্যকর করব।

সর্বশেষ খবর