সোমবার, ৪ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

চলছে জিজ্ঞাসাবাদ-অভিযান

দুজন রিমান্ডে আরও একজন আটক

কক্সবাজার প্রতিনিধি

চলছে জিজ্ঞাসাবাদ-অভিযান

রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ড

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলায় জড়িত সন্দেহে আরও এক রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)-এর একটি টিম। গতকাল দুপুরে কুতুপালং ক্যাম্প-৫ থেকে ইলিয়াস (৩৫) নামে ওই রোহিঙ্গা যুবককে আটক করা হয়। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে আদালতে সোপর্দ করা দুজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। এর আগে গত শনিবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তাদের আদালতে উপস্থাপন করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল।

উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ১৪ এপিবিএন-এর অধিনায়ক পুলিশ সুপার নাঈমুল হক আরও এক রোহিঙ্গা নাগরিককে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটক ইলিয়াসকে উখিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। হত্যার পর থেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জেলা পুলিশ ও এপিবিএনের টহল বাড়ানো হয়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতাসহ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গতকাল পর্যন্ত পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।

কক্সবাজার আদালত পুলিশের পরিদর্শক চন্দন কুমার সরকার জানান, আটক রোহিঙ্গা নাগরিক মোহাম্মদ সেলিম ও শওকত উল্লাহকে পুলিশ শনিবার সন্ধ্যায় আদালতে সোপর্দ করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে। এর পর রাতে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তামান্নাহ ফারাহ দুজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ সময় আটক দুই রোহিঙ্গা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বেলা ১১টার দিকে তাদের কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়।

কক্সবাজারের জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম গতকাল বেলা দেড়টায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাভাবিক পরিস্থিতি রয়েছে। ক্যাম্পে এপিবিএন পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।

মুহিবুল্লাহ আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি পিস ফর হিউম্যান রাইটস নামে একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুর এলাকার স্কুলশিক্ষক মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার, নিরাপদে দেশে প্রত্যাবাসন ও তাদের মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার ছিলেন। ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট কুতুপালং শিবিরে রোহিঙ্গাদের বিশাল সমাবেশ করে মুহিবুল্লাহ আলোচনায় আসেন। পরবর্তীতে তিনি যুক্তরাষ্ট্র সফর করে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও দেখা করেন। সেই থেকে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ আন্তর্জাতিকভাবেও আলোচনায় আসেন।

গত বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা মুহিবুল্লাহর নিজ অফিসে তাকে পাঁচ রাউন্ড গুলি করে। এ সময় তিন রাউন্ড গুলি তার বুকে লাগে। এতে তিনি ঘটনাস্থলে পড়ে যান। খবর পেয়ে এপিবিএন সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ‘এমএসএফ’ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার রাতে হত্যার ঘটনায় তার ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর