শিরোনাম
বুধবার, ৬ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা
প্রকল্পে অনিয়ম ধীরগতি

অবসরে গেলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমনকি জড়িতদের মধ্যে যারা অবসরে গেছেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বলেছেন তিনি।

গতকাল একনেক সভা শেষে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে যুক্ত হয়ে একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী।

ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ প্রকল্প বাস্তবায়নে যারা অনিয়ম করেছেন তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। জড়িতদের যারা অবসরে গেছেন প্রয়োজন হলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।

এম এ মান্নান বলেন, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের কাজ শেষ করতে চূড়ান্ত নোটিস দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। যারা এ প্রকল্পের বিলম্বের ক্ষেত্রে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থার জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি এ সময়ের মধ্যে চলমান কাজ শেষ করতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শুধু কারখানার ভিতরে করলে চলবে না। কারখানা এলাকায় ইটিপি স্থাপন করতে হবে। এ ছাড়া কোনো প্রকল্পে বৈদেশিক সহায়তা না পেলে রিজার্ভ থেকেও ঋণ নেওয়া যেতে পারে। তবে সে ঋণ পরিশোধ করতে হবে রিজার্ভ থেকে। এ ছাড়া দেশের সব এলাকায় সমানভাবে উন্নয়ন কাজ করতে হবে. যাতে কোনো এলাকা অবহেলিত না থাকে। নদী, খাল নিয়মিত ড্রেজিংয়ের নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১২ সালে যখন অনুমোদিত হয় তখন এর ব্যয় ধরা ছিল ২৭৫ কোটি টাকা। এখন সে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮২ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে দরপত্র আহ্বানে অনিয়ম, একাডেমিক ও হাসপাতাল নির্মাণে অনিয়মসহ বেশ কিছু অনিয়ম পেয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আইএমইডি। গতকাল একনেক সভায় আইএমইডির তদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেন সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী।

বঙ্গবন্ধু টানেলের দ্বিতীয় চ্যানেল : কর্ণফুলী নদীর নিচে সুড়ঙ্গপথ বঙ্গবন্ধু টানেলের দ্বিতীয় চ্যানেলের মুখ শুক্রবার রাতে খুলে দেওয়া হবে। গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, অন্যতম মেগা ও স্বপ্নের প্রকল্প বঙ্গবন্ধু টানেলের দ্বিতীয় চ্যানেলের মুখ শুক্রবার রাতে খুলে দেওয়া হবে। একটা চ্যানেলের মুখ আগেই খুলে দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার মধ্যরাতে দুটির নির্মাণকাজই শেষ হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, আগামী বছরের ২২ ডিসেম্বর এটা চালুর কথা ছিল। কিন্তু এখন যা মনে হচ্ছে তারও আগেই চালু করতে পারব। এটা সবার জন্য আনন্দের ব্যাপার। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলী নদীর পানির স্তরের ৪৫ মিটার গভীর দিয়ে আনোয়ারায় সংযুক্ত হবে বঙ্গবন্ধু টানেল।

৯ প্রকল্প অনুমোদন : ৬ হাজার ৫৫১ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ের ৯টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ৭৪২ কোটি ২৯ লাখ, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৬ কোটি ২২ লাখ আর বৈদেশিক ঋণ ২ হাজার ৭৮২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। গতকাল একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ প্রকল্পগুলোয় অনুমোদন দেওয়া হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে যুক্ত হয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্পগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ‘সায়েদাবাদ পানি সরবরাহ প্রকল্প ফেজ-৩ (প্রথম সংশোধিত)’; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘টাঙ্গাইল-দেলদুয়ার-লাউহাটি-সাটুরিয়া-কাওয়ালীপাড়া-কালামপুর বাসস্ট্যান্ড সড়ক আঞ্চলিক মহাসড়কের যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’; কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ (প্রথম সংশোধিত)’ এবং ‘জগন্নাথপুর ও মোহনগঞ্জ উপজেলায় দুটি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (এটিআই) স্থাপন’; স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন (দ্বিতীয় সংশোধিত), কুষ্টিয়া’; পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার নদীতীর সংরক্ষণ, ছোট নদী, খাল-বিল পুনঃখনন ও জলাবদ্ধতা নিরসন’ এবং ‘শরীয়তপুর জেলার কীর্তিনাশা নদীর ডান ও বাঁ তীর রক্ষা’; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘বড়পুকুরিয়া-বগুড়া-কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি লাইন (প্রথম সংশোধিত)’ এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘খুলনা থেকে মোংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্প।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর