বৃহস্পতিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

সাইবার সন্ত্রাস দমনের দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের : মোস্তাফা জব্বার

শামীম আহমেদ

সাইবার সন্ত্রাস দমনের দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের : মোস্তাফা জব্বার

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বিদেশের মাটিতে বসে কেউ কেউ অনলাইন প্ল্যাটফরমে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি বিষোদগারের পাশাপাশি ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদে উসকানি দিচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে জনমত গঠনের চেষ্টা করছে। আমার  দায়িত্ব ডিজিটাল মাধ্যমে এগুলোকে বন্ধ করা বা এগুলোর বিরুদ্ধে রিপোর্ট করা। বিটিআরসির মাধ্যমে আমি সেটা করে যাচ্ছি। তবে সাইবার হোক বা অন্য যে কোনো সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটা দেখবে। এ ছাড়া সাইবার যুদ্ধটা বলা যায় রাজনৈতিক যুদ্ধ। রাজনৈতিকভাবে এটা মোকাবিলা করতে হবে।

সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশের মাটিতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও সাইবার সন্ত্রাস বৃদ্ধি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে কথাগুলো বলেন তিনি। সাইবার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এটা বলা যায় এক ধরনের রাজনৈতিক যুদ্ধ। তাদের টার্গেট রাজনৈতিক দল বা নেতৃত্ব। উদ্দেশ্য দেশের ক্ষতি করা, দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করা। এটাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দের উচিত কর্মীদের সংগঠিত করে এসব সাইবার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল প্ল্যাটফরমেই পাল্টা জবাব দেওয়া। তিনি বলেন, অপরাধীদের আটক করা, বিদেশ থেকে ফিরিয়ে আনা, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া- এগুলো আমার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়। অভিযুক্ত বিভিন্ন ওয়েবসাইট বন্ধ করা, আপত্তিকর কমেন্ট বা কন্টেন্টের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করা আমার দায়িত্ব। আমাদের দায়িত্ব আমরা পালন করে যাচ্ছি। এর মধ্যে আমরা অপরাধমূলক ২২ হাজারের বেশি পর্নোসাইট বন্ধ করেছি। ৬ হাজারের বেশি ভুয়া ও প্রতারণামূলক ওয়েবসাইট বন্ধ করেছি। জুয়ার সাইট বন্ধ করেছি। যখন যে রিপোর্টটা আমাদের কাছে করা হয়, সেটা ফেসবুক বা অন্য কোনো মাধ্যমের বিরুদ্ধে হোক, সেখানে আমরা যোগাযোগ করি, রিপোর্ট করি। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার পুরোপুরি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। আর বিচার করার দায়িত্ব বিচার বিভাগের। যাদের দায়িত্ব তাদেরই পালন করতে দিতে হবে। মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমি ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে বন্ধ করে দিচ্ছি। কিন্তু ফেসবুক বা ইউটিউব তো আমি বন্ধ করতে পারি না। ৪ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। এখানে খারাপ যেমন আছে, ভালোও আছে। লাখ লাখ লোক ফেসবুক ব্যবহার করে ব্যবসা করে। এখানে শিক্ষণীয় অনেক কিছু আছে। তার পরও আমরা বন্ধ করলে ভিপিএন দিয়ে দেখতে পারবে। আর সুনির্দিষ্ট পেজ, সুনির্দিষ্ট কমেন্ট বা কন্টেন্ট বন্ধ করার টেকনোলজি সারা দুনিয়ায় নেই। এটার জন্য আমরা রিপোর্ট করতে পারি। আমরা ফেসবুকে রিপোর্ট দিলে তারা পছন্দ হলে বন্ধ করে, না হলে করে না। আর পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার আমার নেই। এ এখতিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে সাইবার সন্ত্রাস ক্রমেই বাড়ছে। দেশ ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সমালোচনা ছাড়াও ধর্মীয় উগ্রবাদ সৃষ্টি, যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে জনমত গঠন ও দেশে জঙ্গিবাদের প্রসার ঘটাতে তারা ব্যবহার করছে অনলাইন প্ল্যাটফরম। কেউ কেউ আবার সমালোচনার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে সনাতন হিন্দু ধর্ম, ইসলাম ধর্ম, কোরআন, আল্লাহ-খোদা কোনো কিছুই বাদ দিচ্ছেন না। এসব ব্যক্তিদের অধিকাংশেরই একটি জায়গায় মিল, তা হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নেওয়া ও দেশে জঙ্গিবাদ বিস্তারে উসকানি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর