শুক্রবার, ৮ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা
স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজিকে হাই কোর্ট

কীসের এত মহব্বত সাহেদের সঙ্গে, তা কীভাবে হয়েছিল?

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা নেগেটিভের ভুয়া সনদ ও প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার সাহেদ করিমের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিচারিক আদালত। দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজির জামিন শুনানিতে আদালত এ প্রশ্ন করে। সাহেদকে নিয়ে আবুল কালামের বক্তব্য শুনে বিচারক বলেন, আপনার কীসের এত মহব্বত সাহেদের সঙ্গে? আর তা কীভাবে হয়েছিল?

ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে গতকাল দুপুরে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন আবুল কালাম আজাদ। শুনানি শেষে বিচারক আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আদেশ দেন। শুনানি চলাকালে আবুল কালাম আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারককে বলেন, আমি সারা জীবন কোনো অন্যায় করিনি। আর কখনো অন্যায় করব না। সারা পৃথিবীতে করোনার যে অবস্থা, সেই অবস্থায় সচিব মহোদয়ের নির্দেশে এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের সক্ষমতা না থাকায় মানুষের জীবন বাঁচাতে এটা করতে হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মন্ত্রী ও সচিব মহোদয়ের সামনে স্বাক্ষর করা হয়েছিল। সাহেদ যে একজন প্রতারক ছিল, সেটা আমার জানা ছিল না। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে রিজেন্ট হাসপাতালের মাধ্যমে ৫০টি করোনা টেস্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মানবসেবার নামে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার জন্য টাকা নিচ্ছে রিজেন্ট হাসপাতাল, এমন অভিযোগ জানতে পারি। এরপর আমি সঙ্গে সঙ্গে বললাম, এই দুটি শাখা বন্ধ হয়ে যাবে। সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার ভুয়া সনদ দেওয়ার অভিযোগ আছে। এ নিয়ে মামলার পর আত্মগোপনে যাওয়া সাহেদকে গত বছরের ১৫ জুলাই সাতক্ষীরা সীমান্তে গ্রেফতারের কথা জানায় র‌্যাব। বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, সাহেদের কাছ থেকে একটি অবৈধ অস্ত্র পাওয়া গেছে। সাহেদকে নিয়ে আবুল কালামের বক্তব্য শুনে বিচারক বলেন, আপনার কীসের এত মহব্বত সাহেদের সঙ্গে? আর তা কীভাবে হয়েছিল?

তখন আবুল কালাম বিচারককে বলেন, স্বাক্ষর হওয়ার দিনে সাহেদের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়েছিল। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মন্ত্রী মহোদয় উপস্থিত ছিলেন। আরও বড় বড় কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন। তারপর থেকে সাহেদের সঙ্গে আমার পরিচয়। আমি আগে থেকে জানতাম না সাহেদ একজন প্রতারক ছিলেন।

আবুল কালামের পক্ষের আইনজীবী মাসুদ মজুমদারসহ অন্যরা জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মীর আহম্মেদ আলী সালাম জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আবুল কালাম আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত জামিনে থাকবেন বলে জানান বিচারক ইমরুল কায়েশ।

সর্বশেষ খবর