শিরোনাম
শনিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা
পেশাজীবীদের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

গণআন্দোলন সফল করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের এক দফা দাবিতে বিএনপিকে রাজপথে নামার পরামর্শ দিয়েছেন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা। পাশাপাশি এ ইস্যুতে আন্দোলন কর্মসূচি দিলে তাতে সক্রিয় অংশ নেওয়ারও অঙ্গীকার করেন তারা। পেশাজীবী নেতারা বলেন, নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন ইস্যুতে পরিকল্পনামাফিক সবাইকে নিয়ে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এ লক্ষ্যে গণআন্দোলন সফল করতে দলমত নির্বিশেষে সব পেশাজীবীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এর বিকল্প নেই।

বিএনপিকে গতকাল এ পরামর্শ দিয়েছেন পেশাজীবীরা। বৈঠকসূত্র জানান,            ভার্চুয়ালি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রথম দিন রুদ্ধদ্বার বৈঠকে পেশাজীবীরা এ পরামর্শ দেন। বিকাল ৪টা থেকে টানা সাড়ে তিন ঘণ্টা বৈঠক হয়। বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান। আজও পেশাজীবীদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঠিক করতে ৩২টি পেশাজীবী সংগঠনের নেতা, প্রতিনিধিদের এ বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

গতকাল জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন, আইনজীবী ফোরাম, ড্যাব, অ্যাব, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য জোট, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী ফোরাম, আইনজীবী সমিতি সুপ্রিম কোর্ট, আইনজীবী ফোরাম, ঢাকা জাজ কোর্ট, ঢাকা আইনজীবী সমিতি, এমবিএ অ্যাসোসিয়েশন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, ডিপ্লোমা এগ্রিকালচার অ্যাসোসিয়েশন, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন, টেক্সটাইল অ্যাসোসিয়েশন, মেডিকেল টেকনোলজিস অ্যাসোসিয়েশন, ফিজিওথেরাপিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, ইউনানি আয়ুর্বেদী ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশনসহ ২০টি পেশাজীবী সংগঠন গতকালের বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠকের শুরুতে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দী, গণতন্ত্রের যে সংকট, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এর থেকে উত্তরণে আপনাদের মতামত রাখার আহ্বান করেছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সূত্র জানান, পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা তাদের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব লিখিত আকারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে দেন। কয়েকটি সংগঠনের নেতা সভায় বলেন, অবৈধ সরকারের পতন ঘটাতে মৌলিক একমাত্র লক্ষ্য হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। এ লক্ষ্যে কঠিন সংকল্প নিয়ে এক দফা আন্দোলনে নামতে হবে। অর্থাৎ আন্দোলন হবে এক দফার ভিত্তিতে। বাড়তি অন্য কোনো অপশন দেওয়া যাবে না। আন্দোলনে একাধিক দাবি থাকলে মূল দাবি দুর্বল হয়ে যায়। নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তখন বিক্ষিপ্ত হয়ে আন্দোলনের মহাস্রোতটি ক্রমে ক্ষীণ হয়ে হয়ে একসময় হারিয়ে যায়। মূল দাবি মানতে বাধ্য করাতে পারলে অন্য দাবিসমূহ যথাসময়ে পূরণ হতে থাকবে। নেতারা আরও বলেন, অতীতের মতো বর্তমানেও গণতন্ত্র এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যে কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপিকেই নেতৃত্ব দিতে হবে। বিএনপির নেতৃত্ব মেনে নিয়ে এ আন্দোলনের অংশীদার হতে চাইলে ছোট-বড় যে কোনো দলকে জোটে নেওয়া যাবে। আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সব সদস্যেরই রাজপথে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ থাকতে হবে। ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের আন্দোলনের মাঠে অত্যন্ত সক্রিয় ও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। কোনো কিছুই বিক্ষিপ্তভাবে করা যাবে না। বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মী নিয়ে আলাদা সেল তৈরির পরামর্শ দিয়ে নেতারা বলেন, একেকটি সেলের দায়িত্বে থাকবেন একজন কেন্দ্রীয় নেতা। অনুষ্ঠানে পেশাজীবীদের মধ্যে ছিলেন- জয়নাল আবেদীন, নিতাই রায়চৌধুরী, আহমেদ আজম খান, ফজলুর রহমান, মাহবুব উদ্দিন খোকন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আবেদ রেজা, তৈমূর আলম খন্দকার, রাগীব রউফ চৌধুরী, ফরহাদ ডালিম ডোনার, হারুন আল রশিদ, আবদুস সালাম, আবদুস সেলিম, শহিদুল আলম, সিরাজুল ইসলাম, শফিকুল হায়দার পারভেজ, মাহবুল আলম, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, সেলিম ভূঁইয়া, শামীমুর রহমান শামীমসহ মোট ১০২ জন। বিএনপির ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঠিক করতে গত মাসে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সিরিজ বৈঠক করে বিএনপি। এরপর আইনজীবী ও ২২ পেশাজীবী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই শোকপ্রস্তাব উপস্থাপন করেন সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান সালেহ প্রিন্স। সভা পরিচালনা করেন দফতর সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী। সহযোগিতায় ছিলেন তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজুদ্দিন নসু, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মনির হোসেন, বেলাল আহমেদ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার। ১৪ সেপ্টেম্বর সিরিজ বৈঠক শুরু করে বিএনপি। বিভিন্ন ধাপে পর্যায়ক্রমে দলের ভাইস চেয়ারপারসন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল, যুগ্ম-মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদকমন্ডলীসহ নির্বাহী কমিটির সদস্যরা এসব বৈঠকে অংশগ্রহণ করে তাদের মতামত দেন। পরবর্তীতে দলের অঙ্গসংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মুক্তিযোদ্ধা দল, মহিলা দল, ছাত্রদল, মৎস্যজীবী দল, তাঁতীদলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির হাইকমান্ড।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর