দেশে সাম্প্রদায়িক সম্পীতি বিনষ্টে বাইরের ইন্ধন আছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। গতকাল সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, কুমিল্লার বিষয়টি সরকার খুব গুরুত্বের সাথেই দেখছে। আশা করছি কিছুদিনের মধ্যেই এর ফলাফল দেখতে পাবেন দেশবাসী। দেশের বাইরে থেকে কারো ইন্ধন আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে দেশের ভিতরেও ইন্ধনের অভাব নেই। যেই হোক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। আসাদুজ্জামান খান বলেন, কুমিল্লার পর চাঁদপুরে যে ঘটনা ঘটেছে তাতেও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সম্পীতি বিনষ্ট করার জন্যই এসব ঘটানো হচ্ছে। ঘটনাগুলোর ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এবং নিরাপত্তা বাহিনী যথেষ্ট ধৈর্য্য নিয়ে কাজ করছে।
বিএনপি বলেছে, মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতে সরকারই এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে- এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অনেকে অনেক কথাই বলেন, সেগুলো তথ্যভিত্তিক নয়। যেগুলো উদ্দেশ্যমূলক সেগুলো বলার জন্য বলা। সরকারকে হেয় করতেই তারা এসব কথা বলেন। আমরা কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী, তথ্যপ্রমাণ দিয়েই কথা বলবো। তিনি বলেন, আমরা অনেক কিছুই দেখছি, অনেক কিছুই অনুমান করছি। প্রমাণের অপেক্ষায় আছি, প্রমাণ পেলেই আপনাদের সামনে তুলে ধরব।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, আপনারা (সাংবাদিক) বলছেন, কুমিল্লার ঘটনার অগ্রগতি কী? কুমিল্লায় যে ঘটনা ঘটেছে, আমরা এটি খুব সিরিয়াসলি দেখছি। একটা নির্ভুল তদন্তের মাধ্যমে সব ঘটনা জানাব। বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ, এ ঘটনাটি হঠাৎ করে ঘটার পেছনে নিশ্চয়ই কোনো কারণ রয়েছে।-বিশেষ প্রতিনিধিকিছুদিনের মধ্যে এটি আমরা আরও ক্লিয়ার করতে পারব। এর আগে কক্সবাজারের রামু, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলার সঙ্গে কুমিল্লার ঘটনার মিল পাওয়ার কথা বলেন মন্ত্রী। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা করে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করাই মূল উদ্দেশ্য ছিল। এ দেশের মানুষ ধর্মভীরু, ধর্মান্ধ নয়। এ রকম পরিস্থিতিতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে কাদের লাভ হবে- আপনাদের কাছে সেই জিজ্ঞাসা আমার। কুমিল্লার পর আরও জেলায় একই রকম ঘটনা ঘটার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে বলে মনে করেন আসাদুজ্জামান খান। কুমিল্লার ঘটনার পর চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ এবং বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট ঘটনা ঘটেছে। নোয়াখালীতে হয়েছে, ফেনীতে হয়েছে, কক্সবাজারে হয়েছে। নোয়াখালীতে প্রাণহানি হয়েছে। সবকিছু তদন্তের মাধ্যমে উদ্ঘাটন করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা অবশ্যই করব, যাতে এ সাম্প্রদায়িক সম্পীতি বিনষ্ট করার প্রয়াস যেন কেউ না পায়।