মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ দিনভর ছিল শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের আয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক

চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ দিনভর ছিল শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের আয়োজন

চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় সেরা তিন বিজয়ীকে নিয়ে শেখ রাসেলের জন্মদিনের কেক কাটছেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর -বাংলাদেশ প্রতিদিন

কারও তুলিতে ফুটে উঠল বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের কোলে বসে খাবার খাচ্ছে ১০ বছরের শিশু শেখ রাসেল। পাশে বসে হাসিঠাট্টায় মশগুল বড় ভাই শেখ কামাল, শেখ জামালসহ অনেকে। কেউ আঁকল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে খেলায় ব্যস্ত জাতির জনকের কনিষ্ঠ পুত্রটি। আবার কারও তুলিতে ফুটে উঠল ১৯৭৫ সালে সপরিবারে নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার শিশু রাসেলের বুক থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে মেঝেতে।

গতকাল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেড আয়োজিত শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় এভাবেই শহীদ শেখ রাসেলের নানা স্মৃতি রংতুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলে ছোট্ট সোনামণিরা। আঁকিয়েদের বয়স ১১ বছরের কম হলেও তাদের আঁকা চিত্রকর্মে যেন ফুটে ওঠে বাংলাদেশের ইতিহাস।

এ আয়োজন কেন্দ্র করে গতকাল সকাল থেকেই রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ক্লাবের মাঠটি মুখর ছিল শিশুদের পদচারণে। সবার হাতে ছিল রংতুলি আর স্কেচবোর্ড। ‘শহীদ শেখ রাসেল চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ২০২১’-এ অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজির হয় তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির প্রায় ২০০ খুদে প্রতিযোগী। প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল ‘শেখ রাসেলকে নিয়ে যা আঁকতে ভালো লাগে’। দেড় ঘণ্টার প্রতিযোগিতায় খুদে চিত্রকররা মনের মাধুরী মিশিয়ে রংতুলিতে নিজের মতো করে আঁকে শেখ রাসেলের জীবনের নানা মুহুর্ত। বিচারকদের মন জয় করে প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে নেয় আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. মিনহাজ জামান। দ্বিতীয় হয় ভিকারুননিসা নূন স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিথিলা ভৌমিক আর তৃতীয় হয়েছে নারায়ণ আইডিয়াল স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শ্রেয়সী সাহা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান। তিনি খুদে চিত্রকরদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আগত অতিথি ও শিশুদের নিয়ে কেক কাটেন। এরপর বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের চেক, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের ডিরেক্টর ইনচার্জ ইসমত জামিল আকন্দ লাবলু, পরিচালক (ক্রীড়া) সালেহ জামান সেলিম প্রমুখ। প্রথম পুরস্কার হিসেবে বিজয়ী পেয়েছে ১ লাখ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা আর তৃতীয় পুরস্কার ছিল ২৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া বিজয়ীদের ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট, স্কুলব্যাগসহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ দেওয়া হয়। প্রতিযোগীদের মধ্যে ২৭ জনকে শুভেচ্ছা পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় স্কুলব্যাগসহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ। অংশগ্রহণকারী সবাইকেই সার্টিফিকেট ও নগদ ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারক ছিলেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক ইমদাদুল হক মিলন, সহকারী বিচারক ছিলেন শহীদ আনোয়ার উচ্চবিদ্যালয়ের চারুকলা শিক্ষক শেখ ফারহানা টুম্পা এবং তরুণ শিল্পী ও কালের কণ্ঠের কার্টুনিস্ট প্রসূন হালদার। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ ইসমত জামিল আকন্দ লাবলু বলেন, ‘শহীদ শেখ রাসেল নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর মেধার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। শেখ রাসেল আজ বাংলাদেশের শিশু-কিশোর, তরুণ, শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে এক ভালোবাসার নাম। শেখ রাসেলের এই ছোট্ট জীবন আমাদের জন্য অনেক শিক্ষণীয়।’ চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজনের বিষয়ে অভিভাবকরা বলেন, করোনার কারণে শিশুরা দীর্ঘদিন ঘরবন্দী ছিল। তারা মানসিকভাবে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই সময়ে। সব ধরনের আয়োজন বন্ধ থাকায় কোথাও অংশগ্রহণের সুযোগ ছিল না তাদের। শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় শিশুরা খুব আনন্দের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছে। এমন আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান তারা।

সর্বশেষ খবর