সোমবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

চাঁদা না দেওয়ায় শোরুমে ডাকাতি গ্রেফতার ৬

নিজস্ব প্রতিবেদক

পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম ভাঙিয়ে রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় চাঁদাবাজি করত ওরা। বেশির ভাগ সময় ব্যবসায়ী ও নির্মাণাধীন ভবন মালিকদের টার্গেট করত। তবে দাবি করা চাঁদা না পেলে ভুক্তভোগীদের হুমকি দেওয়া হতো। পাশাপাশি সেই প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ডাকাতি করে লুটে নিত সবকিছু। এভাবেই শ্যামলীর মোটরসাইকেল শোরুম ইডেন অটোসে চাঁদা না পেয়ে ১৩ অক্টোবর এ চক্রের সদস্যরা সেখানে ঢুকে দুজনকে কুপিয়ে টাকা ও কিছু দামি জিনিস লুট করে আত্মগোপনে চলে যায়। তবে  শেষ রক্ষা হয়নি। শনিবার দিবাগত রাতে র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও  র‌্যাব-২ এর যৌথ অভিযানে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এবং ধামরাই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাত চক্রের মূল হোতা জসিম উদ্দীনসহ জহিরুল ইসলাম জহির, জাহিদুল ইসলাম শিকদার, খায়রুল ভূঁইয়া, রাকিব হাসান ও নয়নকে গ্রেফতার করে। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত চারটি চাপাতি ও নগদ ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা উদ্ধার করে র‌্যাব।

গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংস্থাটির মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, ১১ অক্টোবর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকায় জসিমের বাড়িতে বসে জহির, জাহিদ, নয়ন, খায়রুল ও রাকিব এক হয়ে ইডেন অটোস শোরুমে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। ওই দিন সন্ধ্যায় তারা শোরুমটি রেকি করে। জসিম ও জহির ঢাকা উদ্যান কাঁচা বাজার থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত চারটি চাপাতি কেনে। পরদিন আবারও শোরুমের সামনে যায় তারা এবং ভিতরে ঢুকে চাপাতি দিয়ে দুজনকে জখম করে। অন্যরা শোরুমে ভাঙচুর চালায়। ৫-৬ মিনিটে ডাকাতি শেষ করে তারা পালিয়ে যায়। কমান্ডার মঈন বলেন, ১২ অক্টোবর উত্তরা মোটরসের ডিলার ইডেন অটোস নামের শোরুমে একটি ডাকাত দল প্রবেশ করে ম্যানেজার ওয়াদুদ সজীব এবং মোটর টেকনিশিয়ান নুরনবী হাসানকে ধারালো চাপাতি দিয়ে আঘাত করে। এ সময় ডাকাত দলের কিছু সদস্য শোরুমের দোতলায় উঠে গ্লাস, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও ক্যাশ ড্রয়ার ভাঙচুর করে। তারা ক্যাশ থেকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা এবং ডেস্কটপ কম্পিউটারের মনিটর নিয়ে পালিয়ে যায়। এর আগে থেকে তারা প্রতিষ্ঠানটির মালিককে বিভিন্ন সন্ত্রাসীর নামে হুমকি দিয়ে আসছিল ও চাঁদা দাবি করছিল।

গ্রেফতার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, তারা মোহাম্মদপুরকেন্দ্রিক একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সদস্য। তাদের দলে ৮-১০ জন রয়েছে। মোহাম্মদপুর, বছিলা, শ্যামলী এবং আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম ভাঙিয়ে কয়েক বছর ধরে চাঁদাবাজি করছিল তারা। এ ছাড়া তারা মাদক ও চোরাই অটোরিকশা ব্যবসা, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত। র‌্যাবের দাবি, এই চক্রটি রাজধানীর মোহাম্মদপুর, বছিলা, শ্যামলী এলাকায় আস্তানা গেড়ে বিভিন্ন অপকর্ম করছিল। এসব এলাকার বিভিন্ন পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম ভাঙিয়ে কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, নির্মাণাধীন ভবন মালিকদের টার্গেট করে চাঁদাবাজি করছিল। চাঁদার টাকা না পেলে ভুক্তভোগীদের বিভিন্নভাবে হুমকি ও ভয়-ভীতি দেখাত। এর পরও কেউ চাঁদা দিতে রাজি না হলে তারা বাসাবাড়ি অথবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ডাকাতি করত। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক চুরি, ছিনতাইয়ের মামলাও রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর