মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

ই-কমার্সে ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তারা পাবেন ২১৪ কোটি টাকা

তিন মন্ত্রীর বৈঠক শেষে জানালেন বাণিজ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাইয়ের পর ই-কমার্সে অর্ডার দিয়েও যারা পণ্য বুঝে পাননি তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি জানান, ই-কমার্সে ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তাদের ২১৪ কোটি টাকা আমানত এসক্রো সার্ভিসে আটকে আছে। সেটাই ফেরত দেবে সরকার। যাচাই-বাছাই শেষে আগামী তিন মাসের মধ্যে এ অর্থ ভোক্তাদের হাতে পৌঁছানো হবে বলেও জানান তিনি।

ই-কমার্স সংকট নিয়ে গতকাল বিকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে তিন মন্ত্রীর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তবে ১ জুলাইয়ের আগে যেসব গ্রাহক ইভ্যালিসহ বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে পণ্য কেনার অর্ডার দিয়েছেন, তাদের টাকা ফেরতের বিষয়ে সরকারের কিছু করার নেই বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে টিপু মুনশি বলেন, ইভ্যালির গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধের বিষয়টি আদালতের ওপর নির্ভর করছে। আদালত একটি পরিচালনা পর্ষদও গঠন করে দিয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সবকিছু হবে। এক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কিছু করণীয় নেই।

তিনি বলেন, যুবক ও ডেসটিনির অনেক সম্পদ রয়েছে। সেসব সম্পদ অনেকে দখল করে ভাড়া দিচ্ছে। সম্পদগুলোর দামও এখন বেড়েছে।  সেখানেও গ্রাহকদের অনেক পাওনা আছে। এই দুই কোম্পানি নিয়েও আদালতে মামলা রয়েছে। আদালত নির্দেশনা দিলে তাদের সম্পদ বিক্রি করে গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ১ জুলাই থেকে এসক্রো সার্ভিস চালুর পর যেসব  ক্রেতা অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করেও পণ্য পাননি, তাদের দেওয়া অর্থ পেমেন্ট গেটওয়েগুলোর কাছে রয়েছে। সেখান  থেকেই ক্রেতাদের কাছে তা ফেরত পাঠানো হবে। সচিব বলেন, এসক্রো সার্ভিস চালুর আগে যেসব ক্রেতা অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করেছেন, তাদের টাকা ই-কমার্স কোম্পানিগুলোর কাছে চলে  গেছে। সেসব টাকা ই-কমার্স কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে উদ্ধার করা  বেশ জটিল। ফলে তাদের অর্থ ফেরত দেওয়ার বিষয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়। জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ই-কমার্স সেক্টর নিয়ন্ত্রণে আপাতত কোনো নতুন আইন বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করা হবে না। বিদ্যমান আইন ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এ সেক্টরে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, গত ৫ বছরে বাংলাদেশে ২৫০০টি স্টার্টআপ যাত্রা শুরু করেছে। এসব কোম্পানিতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ৫০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। এ খাতে কর্মসংস্থানের পরিমাণ প্রায় ১৫ লাখ। সভায় জানানো হয়, ই-কমার্স কোম্পানিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ইউনিক বিজনেস আইডেনটিফিকেশন নম্বর নিতে হবে। যেসব ই-কমার্স  কোম্পানি এই নম্বর নেবে না, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া ই-কমার্সগুলোর জন্য সেন্ট্রাল লগইন, চ্যাটিং প্ল্যাটফরম তৈরির পাশাপাশি অনলাইন সেন্ট্রাল কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম তৈরি করা হবে বলেও জানানো হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর