মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

কুমিল্লায় রিমান্ডে মুখ খুলছেন না ইকবাল

নোয়াখালীতে গ্রেফতার ১১

কুমিল্লা ও নোয়াখালী প্রতিনিধি

বিভিন্ন মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও ফেসবুকে উসকানিমূলক প্রচারণার অভিযোগে নোয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ফয়সল ইনাম কমল (৩৯) ও সেনবাগ উপজেলার বীজবাগ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা হারুনুর রশিদসহ (৪৮) ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ২৪ ঘণ্টায় তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ নিয়ে ১১টি মামলায় বেগমগঞ্জে ১৩৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। অপরদিকে কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘির পাড়ের অস্থায়ী পূজামন্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখার ঘটনায় ইকবাল হোসেনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও ঘটনার পেছনে কার ইন্ধন রয়েছে, তা স্বীকার করছেন না তিনি। এ ঘটনায় ইকবালসহ চারজন সাত দিনের রিমান্ডে আছেন। একটি সূত্র জানায়, ইকবালের আচরণে মনে হয় তিনি অনেক ট্রেইনড।

এ ছাড়া কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনওয়ারুল আজিম জানান, পূজামন্ডপে কোরআন রাখা ইকবাল ও ৯৯৯-এ কল করা ইকরামের বিরুদ্ধে আগে থেকেই মামলা রয়েছে বিভিন্ন থানায়। ইকবালের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা রয়েছে। ২০১৮ সালে ১১ নভেম্বর মামলাটি দায়ের করা হয়। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। ইকরামের বিরুদ্ধে রয়েছে ছিনতাইয়ের মামলা।

ইকবাল নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে বসবাস করেন। তার বাবার নাম নূর আহম্মদ আলম। সুনির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই ইকবালের। কখনো বাসের হেলপার, কখনো রাজমিস্ত্রির সহকারীর কাজ করেন। তবে বিভিন্ন মাজারে তার অবাধ যাতায়াত রয়েছে। এদিকে পূজামন্ডপে কোরআন পাওয়ার ঘটনার দিন সকালে ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশের কাছে ঘটনা জানানো ইকরামের বিষয়ে জানা যায়, তিনি কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ ও চুরি-ছিনতাইয়ে জড়িত। তার বিরুদ্ধে কুমিল্লা ও ফেনীতে চুরি-ছিনতাই এবং অন্যের জায়গা দখলের অভিযোগে দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি করা হয় কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল। চুরি-ছিনতাই ও অন্যের জায়গা দখলের অভিযোগে মামলাটি করা হয়। এ ছাড়া ফেনীর মামলাটি হয় ২০১৮ সালের ১২ মার্চ। বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়।

সিআইডি কুমিল্লার পুলিশ সুপার শাহ মো. রেজোয়ান জানান, ঘটনার গভীরে কাদের ইন্ধন ছিল, তাদের টার্গেট করে তদন্ত চলছে। ইকবালকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলেও গতকাল বিকাল পর্যন্ত কারও নাম স্বীকার করেননি তিনি। ইকরামসহ বাকি দুজনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম গতকাল বেলা ১১টায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান, কুমিল্লার ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার  উসকানিমূলক বক্তব্য ফেসবুকে প্রচারসহ বিভ্রান্তি এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দল ও জামায়াত নেতাসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ফয়সল ইনাম কমলের বিরুদ্ধে ৩২টি মামলাসহ ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৩ অক্টোবর নগরীর নানুয়ার দিঘির পাড়ের অস্থায়ী পূজামন্ডপে হনুমানের মূর্তির কোলের ওপর পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার ঘটনার পর থেকে সারা দেশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর