বুধবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

বাংলাদেশকে ডাকছে ইতিহাস

অবিশ্বাস্য ঘটনা! টি-২০তে এখনো ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে কোনো ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের এই সপ্তম আসরে প্রথমবারের মতো আজ সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। প্রথম দেখায় ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ইতিহাস গড়তে চায় বাংলাদেশ।

সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হেরে যাওয়ায় কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গেছে টাইগাররা। অন্যদিকে নিজেদের প্রথম ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৫৫ রানে প্যাকেট করে দারুণ ছন্দে ইংলিশরা। কিন্তু টি-২০ ক্রিকেটে ফেবারিট বলে কিছু নেই। ভারতের মতো সুপার ফর্মে থাকা দলও ১০ উইকেটের ব্যবধানে হারে। চ্যাম্পিয়ন উইন্ডিজও বাইশগজে খেই হারিয়ে ফেলছে। তাই প্রথম ম্যাচ হারার পরও বাংলাদেশের বোলিং কোচের কণ্ঠে আত্মবিশ্বাস। গতকাল ওটিস গিবসন বলেন, ‘আমরা যেকোনো দলকে হারানোর সামর্থ্য রাখি। এটা ঠিক যে, ইংল্যান্ড খুবই শক্তিশালী দল। তারা প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৫৫ রানে অলআউট করেছিল। কিন্তু নিজেরাও তো ছোট টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়েছে। প্রথম রাউন্ডে আমরা কিছুটা ঝামেলায় পড়েছিলাম। তারপর ঠিকই বাউন্স ব্যাক করেছি। তাই জোর গলাতেই বলছি, নিজেদের সেরা দিনে যে কাউকে হারাতে পারি আমরা।’

আগের ম্যাচে বেশ কিছু ভুল করেছিল বাংলাদেশ। লিটন দাসের মিস করা দুটি ক্যাচের চড়া মূল্য দিতে হয়েছে। এজন্য গতকাল দুবাই স্পোর্টস সিটিতে আইসিসি একাডেমী মাঠে বেশি বেশি ক্যাচ প্রাকটিস করানো হয়।

লঙ্কানদের বিরুদ্ধে করা ভুল থেকে শিক্ষা নিলেও সেই ম্যাচটির ভুলে যেতে চান টাইগাররা। তবে ইতিবাচক দিকগুলো মনে রেখে তা থেকে অনুপ্রাণিত হচ্ছে ক্রিকেটাররা।  বাংলাদেশের গ্রুপে সবচেয়ে কঠিন দল ইংল্যান্ড। তাদের হারাতে হলে নিখুঁত ক্রিকেট খেলার বিকল্প নেই। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং -তিন বিভাগেই দেখাতে হবে দাপট। ব্যাটিংয়ে দারুণ ফর্মে আছেন মোহাম্মদ নাঈম। এই টাইগার ওপেনার প্রথম ম্যাচে একাদশে সুযোগ পাননি। কিন্তু পরের তিন ম্যাচে দুই দুটি হাফসেঞ্চুরি করেছেন। ছন্দে ফিরেছেন ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ মুশফিকুর রহিম। লঙ্কানদের বিরুদ্ধে একটি হাফসেঞ্চুরি করেছেন। টি-২০তে গত দুই বছরের মধ্যে প্রথম অর্ধশতক মুশফিকের। ইংলিশদের বিরুদ্ধেও বড় ইনিংস খেলার জন্য মুখিয়ে আছেন তিনি। আগের ম্যাচে ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডডার সাকিব আল হাসান। কিন্তু বল হাতে তিনি দাপট দেখিয়েছেন। তবে সাকিব সব বড় দলের বিরুদ্ধে জ্বলে ওঠেন। তাই তার কাছ থেকে আজ আবুধাবিতে একটি বড় ইনিংস যেন প্রাপ্যই হয়ে গেছে বাংলাদেশের। 

ব্যাটিংয়ে সুবিধা করতে পারছে না মিডল অর্ডার। আফিফ হোসেন ও নুরুল হাসান সোহানকে দলে রাখা হয়েছে বাইশগজে গিয়ে দ্রুত রান তোলার জন্য। কিন্তু বার বার ব্যর্থ হচ্ছেন। হয়তো আবুধাবিতে আজ দেখা যেতে পারে অন্য চিত্র।

বিশ্বকাপে বরাবরই ভালো বোলিং করছেন টাইগাররা। যদিও শেষ ম্যাচে হারের পেছনে অনেকটা দায় আসে বোলারদের ওপরই। কিন্তু সেই ম্যাচে বেশি রান দিয়েছেন তো পার্টটাইমাররা। যদিও নিয়মিত বোলার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন এক ওভারে ২২ রান দিয়েছেন। বোলিং কোচ ওটিস গিবসন মনে করেন, এই ম্যাচে সে রকম দৃশ্য আর দেখা যাবে না! আগের ম্যাচে শারজাহর স্লো ও লো উইকেটের কথা চিন্তা একজন বাড়তি স্পিনার হিসেবে নাসুম আহমেদকে একাদশে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আবুধাবির কন্ডিশন খানিকটা ভিন্ন। সেখানে পেসারদের জন্য বরাবরই সহায়তা থাকে। সে কারণেই আজকের ম্যাচে নাসুম আহমেদের জায়গায় দেখা যেতে পারে পেসার তাসকিন আহমেদকে। তবে দলে যারাই খেলুক না কেন তা নিয়ে ভাবছেন না ক্যাপ্টেন মাহমুদুল্লাহ। তার লক্ষ্য একটাই - জয়। ইংলিশদের বিরুদ্ধে নিজেদের প্রথম ম্যাচ জিতে ইতিহাসে নাম লেখাতে চায় বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্নও বাঁচিয়ে রাখার প্রত্যয় তো আছেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর