রাজধানীর বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় আত্মসমর্পণ করে ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমণিসহ তিনজন জামিন পেয়েছেন। গতকাল ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক রবিউল আলম তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন পাওয়া অপর দুজন হলেন আশরাফুল ইসলাম দিপু ও কবির হোসেন। এদিন পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ ছুটিতে থাকায় অভিযোগপত্র গ্রহণের জন্য আগামী ১৫ নভেম্বর দিন ধার্য করে ভারপ্রাপ্ত আদালত। এ ছাড়া পরীমণিসহ তিনজন আদালতে উপস্থিত হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। ৪ অক্টোবর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী মোস্তফা কামাল আদালতে পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, চিত্রনায়িকা পরীমণির বাসা থেকে জব্দ করা মাদকদ্রব্যের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে সিআইডিকে জানানো হয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরীমণির নামে মদজাতীয় পানীয় সেবনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। গত বছরের ৩০ জুন ওই লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়। পরীমণি বিভিন্ন স্থান থেকে এই মামলার দুই আসামি আশরাফুল ইসলাম ও কবির হোসেনের মাধ্যমে অবৈধ মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে বাসায় রেখেছিলেন। মাদকদ্রব্য রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। পরীমণি তার গাড়িটি মাদক বহনে ব্যবহার করতেন। গত ৪ আগস্ট অভিযান চালিয়ে পরীমণিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। অভিযানে নতুন মাদক এলএসডি, মদ ও আইস উদ্ধার করা হয়। তার ড্রয়িংরুমের কাভার্ড, শোকেস, ডাইনিংরুম, বেডরুমের সাইড টেবিল ও টয়লেট থেকে বিপুল পরিমাণ মদের বোতল উদ্ধার করা হয়। তার পরদিন গত ৫ আগস্ট র্যাব বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় পরীমণি ও তার সহযোগী বিপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে। ওইদিন পরীমণি ও তার সহযোগীর চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। এরপর সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ মামলায় গত ১০ আগস্ট পরীমণি ও তার সহযোগী দিপুর দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। গত ১৩ আগস্ট দ্বিতীয় দফার রিমান্ড শেষে পরীমণি ও তার সহযোগী দিপুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। গত ১৬ আগস্ট পরীমণিকে ফের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এরপর গত ১৯ আগস্ট আদালত তার জামিন আবেদন খারিজ করে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। গত ২১ আগস্ট তৃতীয় দফার রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর গত ৩১ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত তাকে জামিন দেয়।
