শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

সাকিবদের শেষ আশা আজ

বিশ্বকাপে আজই কি বাংলাদেশের শেষ সুযোগ? হ্যাঁ, ঠিক তাই! সেমিফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে হলে জয়ের বিকল্প নেই। হারাতেই হবে গেইল-পোলার্ড-রাসেলদের ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ‘ডু অর ডাই’ ভেবেই আজ সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ।

ক্যারিবীয় দলটি এখন আর আগের মতো সুপার পাওয়ার নয়। তারা এই বিশ্বকাপে হয়ে গেছে ‘বুড়ো’দের দল। প্রথম দুই ম্যাচেই লজ্জাজনকভাবে হেরে গেছে। ক্রিস গেইল, আন্দ্রে রাসেল, কাইরন পোলার্ড, সিমরন হেটমায়ারের মতো পাওয়ার হিটার থাকার পরও ইংলিশদের বিরুদ্ধে মাত্র ৫৫ রানে অলআউট হয়েছিল। ঠিক পরের ম্যাচেই তারা দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও পাত্তা পায়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরেছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের বিচারে বাংলাদেশকেও এগিয়ে রাখার উপায় নেই। টানা দুই ম্যাচ হেরে তাদেরও পীঠ এখন দেয়ালে ঠেকে গেছে।  তবে টাইগাররা এই ভেবে একটুখানি স্বস্তি পেতে পারে যে, শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৮ উইকেটে পরাজিত হলেও সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে প্রায় জিতেই যাচ্ছিল। একটুখানি ভুলের কারণে লঙ্কানদের বিরুদ্ধে ম্যাচটি হেরে যায়। যদিও ম্যাচ হারার পর ব্যবধানে দেখে আর কোনো লাভ হয় না। পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেও কোনো দলকে বেশি এগিয়ে রাখার উপায় নেই। ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৫ ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে ৬টি। দ্বিপক্ষীয় সব শেষ দুই সিরিজে একটি করে জিতেছে দুই দল। সব শেষ সিরিজে দেশের মাটিতে বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে হেরেছে ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে। মজার বিষয় হচ্ছে, এর আগের সিরিজে ক্যারিবীয়দের মাটিতে গিয়ে ঠিকই একই ব্যবধানে সিরিজে জিতেছে টাইগাররা। তবে এই পরিসংখ্যানের কোনো গুরুত্ব নেই। পারফর্ম করতে হবে মাঠেই। এটা ঠিক যেন, শেষ দুই ম্যাচে বাংলাদেশ নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলতে পারেনি। প্রথম ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করলেও বোলাররা সুবিধা করতে পারেননি এবং ফিল্ডিংয়ে দুই দুটি ক্যাচ মিস হওয়ায় হেরে যেতে হয়েছে। আর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তো প্রথমে ব্যাটিং নেওয়ার পর ব্যাটসম্যানরা লড়াই করার মতো পুঁজিই সংগ্রহ করতে পারেননি। এখানে সেই পুরনো সমস্যা, পাওয়ার প্লেতে সুবিধা করতে না পারা। ইংলিশদের বিরুদ্ধে ইনিংসের প্রথম ছয় ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে করেছিল মাত্র ২৭ রান। শুরুতেই যেন শেষ হয়ে যায় টাইগাররা। এরপর বোলাররা আহামরি কিছু করে দেখাতে পারেননি। এমনকি তাদের করারও কিছু ছিল না। তবে প্রতিটি ম্যাচই আলাদা। প্রতিদিনই নতুন সম্ভাবনা থাকে, কেবল ভালো পারফর্ম করে তা অর্জন করে নিতে হয়।  কন্ডিশন খুব একটা প্রভাব ফেলছে না। কারণ শারজাহর উইকেট অনেকটা বাংলাদেশের উইকেটের মতোই। স্পিনারদের জন্য বাড়তি সুবিধা থাকে। তবে আইসিসির তৈরি উইকেট সাধারণত স্পোর্টিং হয়ে থাকে। সে স্পিনার কিংবা পেসার হোক বুদ্ধিমত্ত্বা দিয়ে বোলিং করতে পারলে ভালো করার সম্ভাবনা বেশি। একই বিষয় ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রেও। ভুলের স্রোতে গা ভাসিয়ে না দিয়ে ক্যারিশম্যাটিক পারফরম্যান্স দিয়ে নিজেকে আলাদা করে চেনাতে হয়। প্রতিটি ম্যাচই আলাদা। নতুন প্রতিটি দিন নতুন সম্ভাবনা দিয়ে শুরু হয়। নেতিবাচক সব কিছু বাদ নিয়ে আজ নতুন করে শুরু করার দিন। নামিবিয়ার মতো দল যদি নতুন করে ইতিহাস লিখতে পারে, আফগানিস্তান যদি নিজ দেশে হাজারও সমস্যার মধ্যেও আগ্রাসী ক্রিকেট উপহার দিতে-তাহলে বাংলাদেশ কেন পারবে না? হয়তো আজ শারজাহতে অন্য বাংলাদেশকে দেখা যেতে পারে, যে দলটি মানসিক-শারীরিক ক্লান্তি ও দুশ্চিন্তা আরব সাগরে ছুড়ে ফেলে দিয়ে টি-২০ চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে নতুন উদ্দীপনা নিয়ে এগিয়ে যাবে। আশা করতে দোষ কোথায়! আশাই তো মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। তা ছাড়া এই উইন্ডিজকে হারানোর সামর্থ্য সাকিবদের আছে। কেবল দরকার নতুন করে একটা ‘জাগরণ’।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর