টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে তিনজনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। গতকাল ভোরে ঘাটাইল থানায় এ মামলা হয়। ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেন, জয়েনের বড় ভাই জয়নালের স্ত্রী বাদী হয়ে রবিবার সকালে ৩০২ ধারায় অজ্ঞাতনামা একটি মামলা করেছেন। তিনি আরও বলেন, তবে লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এদিকে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়ছার বলেন, ‘ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় আমরা রহস্য অনেকটাই উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি। সাবেক স্ত্রী সুমি আক্তার ও তার শাশুড়ি জমেলা বেগমকে হত্যার পর শাহজালাল নিজেই আত্মহত্যা করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জের ধরে সুমি ও শাহজালাল পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। প্রায় পাঁচ মাস তারা ঘর সংসার করে। এরপর সুমির বাবা জিন্নত আলী তাদের দাওয়াত দিয়ে ডেকে এনে সুমিকে বাড়িতে রেখে দেয়। ওই সময় সুমি অন্তঃসত্ত্বা ছিল। পরে তার গর্ভে থাকা সন্তান নষ্ট করার শর্তে সুমির আগের স্বামী জয়নুদ্দিন বিদেশ থেকে দেশে ফিরে সুমিকে আবার তার কাছে ফেরত নেন। এর কিছুদিন পর জয়নুদ্দিন আবার বিদেশে চলে যায়। সন্তান নষ্ট করায় সুমির সাবেক স্বামী শাহজালাল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।’ পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘সুমির স্বামী জয়নুদ্দিন বাড়িতে না থাকায় মাঝে-মধ্যেই শাহজালাল সুমির শ্বশুরবাড়িতে আসত। ঘরের বারান্দার লোহার গ্রিলের চাবিও ছিল শাহজালালের কাছে। পরে রাতে শাহজালাল সুমির ঘরে প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে ছুরি দিয়ে তার সাবেক স্ত্রী সুমি ও সুমির শাশুড়িকে হত্যা করে। এ সময় সুমির শিশু সন্তানকেও হত্যার চেষ্টা করে। এরপর শাহজালাল নিজেই আত্মহত্যা করে। বিভিন্ন আলামত ঘেঁটে আমরা বিষয়টির রহস্য উদঘাটন করতে পেরেছি। তারপরও ঘটনাটির তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।’ উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধারের ঘটনার কারণ হিসেবে পরকীয়াকে সন্দেহ করছে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসন। তারা জানিয়েছেন, নিহত ওই যুবকের সঙ্গে নিহত প্রবাসীর স্ত্রীর দীর্ঘদিন পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। এর আগে গত শনিবার সকালে উপজেলার দিঘর ইউনিয়নের কাশতলার খামারপাড়া এলাকায় প্রবাসী জয়নুদ্দিনের বাসায় তিনজনের মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা।