বুধবার, ৩ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

আরও একটি হতাশার হার

আরও একটি হতাশার হার

ব্যাটিং কোচ অ্যাশয়েল প্রিন্স কখনো নির্বাক তাকিয়ে থাকছেন বাইশগজের দিকে, আবার কখনো মাথা নেড়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করার চেষ্টা করছেন! কী আছে আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামের পিচে! যে ব্যাটসম্যানরা টিকতেই পারছেন না বাইশগজে। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে মাত্র ৮৪ রানেই অলআউট বাংলাদেশ। জয়ের জন্য ৮৫ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩৯ বল হাতে রেখেই ৬ উইকেটে জিতে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশের বিদায় ঘণ্টা বেজে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে হারার পরই। কাল আবুধাবিতে মাহমুদুল্লাহরা ছিলেন অনেকটা চাপ মুক্ত। তারপরও নিজেদের মেলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের। এই বিশ্বকাপে ভুল করা যেন খুবই স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে গেছে। ভুলের জন্যই শারজাহতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জিততে পারেননি মাহমুদুল্লাহরা। এক ম্যাচে ভুল করেছিলেন ব্যাটসম্যানরা, আরেক ম্যাচে হারতে হয়েছিল বোলারদের ভুলে। আর ফিল্ডিং তো যাচ্ছেতাই ছিলই। ভুলে ভুলেই বিশ্বকাপের সেমিতে খেলার স্বপ্ন শেষ।  এখনো সেই ভুলের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না বাংলাদেশ। কাল সবুজ উইকেট দেখেও টিম ম্যানেজমেন্ট একাদশে রাখলো মাত্র দুই পেসার। অথচ কাল আফ্রিকার পেসাররাই মাহমুদুল্লাহদের ব্যাটিং লাইনআপকে বিধ্বস্ত করে ফেলল। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ দল পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে। এরপর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। ১০ ওভারে ৫ উইকেট নেই, তারপর ১৮.২ ওভারেই অলআউট। ৮৪ রানেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস। মেহেদী হাসান ২৭, লিটন দাস ২৪ এবং শামিম হোসেন ১১ । এ ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের কোটাতেই পৌঁছাতে পারলেন না। পাঁচ ব্যাটসম্যান তো রানের খাতাই খুলতে পারেননি। রাবাদার বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন সৌম্য সরকার, সহজ ক্যাচ তুলে দেন মুশফিকুর রহিম। প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকানোর চিন্তা নিয়ে যেন বাইশগজে নামেন আফিফ হোসেন। কয়েক স্টেপ এগিয়ে এসে ব্যাট চালান। ফল- সরাসরি বোল্ড। ‘হিট উইকেট’ হয়ে শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেছেন নাসুম আহমেদ। শরিফুল ইসলামের নামের পাশেও কোনো রান নেই, অবশ্য কোনো বল মোকাবিলা করার সুযোগই পাননি তিনি। তবে মাত্র ৮৫ রানের টার্গেট দিয়েও দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিপদে ফেলে দিয়েছিলেন দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম। পাওয়ার প্লেতে ৩৩ রানে ৩ উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। একে তো বাংলাদেশের স্কোর বড় নয়, তারপরও বাড়তি পেসারও ছিল না। তাই সহজেই শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে উঠে ৬ উইকেটের বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে প্রোটিয়ারা।  অথচ এই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেই সবচেয়ে ভালো খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের। একে তো প্রত্যাশার চাপ ছিল না। তার ওপর বাড়তি পাওয়া দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো এবং ব্যাটিং কোচ অ্যাশওয়েল প্রিন্স দক্ষিণ আফ্রিকার। তারা প্রোটিয়াদের হাড়ির খবরও জানেন। নিশ্চয়ই দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটারদের শক্তিমত্বা ও দুর্বলতা সম্পর্কেও শিষ্যদের তালিম দিয়েছেন। কিন্তু কী লাভ হলো! ঘুরে ফিরে সেই একই চিত্র। আরও একটি হতাশার হার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর