বুধবার, ৩ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

পুলিশের মারধরে মৃত্যু ও হামলায় দুই মামলা

রংপুরে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও রংপুর

পুলিশের মারধরে মৃত্যু ও হামলায় দুই মামলা

রংপুরের হারাগাছে সোমবার রাতে তাজুল ইসলামের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে থানায় হামলা চালায় স্থানীয়রা। এ সময় প্রতিরোধ করে পুলিশও (বামে)। রাতেই তাজুলের লাশ মর্গে নিয়ে যাওয়া হয় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

রংপুরের হারাগাছ এলাকায় পুলিশের মারধরে তাজুল ইসলামের মৃত্যুর অভিযোগে থানা ঘেরাও এবং ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। অপরদিকে নিহতের ভাই বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। গতকাল দুপুরে নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এদিকে তাজুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, হারাগাছের দালালের হাট নয়াটারি এলাকার শাকাওয়াত হোসেনের ছেলে তাজুল ইসলামকে (৫৫) সোমবার সন্ধ্যায় হারাগাছ থানা পুলিশ আটক করে। এর কিছুক্ষণ পরেই তিনি মারা যান। তাকে পুলিশে পিটিয়ে মেরেছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী হারাগাছ থানা ঘেরাও করে ভাঙচুর চালায়। উত্তেজিত জনগণ এ সময় পুলিশের একটি ভ্যান, পাঁচটি মোটরসাইকেল ও থানার দরজা-জানালার ব্যাপক ভাঙচুর করে। পরে রংপুর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে প্রায় ৩ ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ বলছে, তাজুল হেরোইন সেবন ও বিক্রি করত। পুলিশ তাকে আটক করলে হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একদল লোক থানায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। এদিকে গ্রেফতার আতঙ্কে হারাগাছের অনেকেই আত্মগোপন করেছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অকৃতদার তাজুলকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। ঘটনা তদন্তের দাবি করেছেন তারা। স্থানীয় সাদা মসজিদে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাজুলকে দাফন করা হয়।

রংপুর মেট্র্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কশিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় তাজুলের ভাই মুর্তজা রহমান আবু বাদী হয়ে অপমৃত্যু মামলা করেছেন। এ ছাড়া পুলিশ বাদী হয়ে থানায় ভাঙচুরে ঘটনায় পাঁচ-ছয়জনের নামসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

রংপুরে পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চায় হাই কোর্ট : রংপুরের হারাগাছে পুলিশের নির্যাতনে তাজুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। গতকাল বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেয়। রংপুরের পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত ঘটনা এবং এ ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্তকে বলা হয়েছে। আজ এ বিষয়ে আদেশ দেবে হাই কোর্ট। ঘটনাটি আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।

সর্বশেষ খবর