বুধবার, ৩ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বন নিধন বন্ধে ১০৫ দেশের অঙ্গীকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে বিশ্বকে বাঁচাতে ২০৩০ সালের মধ্যে বন নিধন বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ১০০-এর বেশি দেশের নেতারা। এবারের গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলনে এটিই প্রথম বড় সমঝোতা। গত রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১০৫ দেশ এ অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেছে। এর মধ্যে আছে কানাডা, ব্রাজিল, রাশিয়া, চীন, ইন্দোনেশিয়া, কঙ্গো, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশ। অঙ্গীকারনামায় ইতিমধ্যে স্বাক্ষর করা দেশগুলো প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারলে বিশ্বের ৮৫ শতাংশ বনভূমি রক্ষা পাবে। পরিবেশবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে ২০১৪ সালে ধীরগতিতে বন উজাড় নিয়ে করা চুক্তি ব্যর্থ হয়েছে বলেও সতর্ক করেছেন। তারা বলেছেন, শুধু প্রতিশ্রুতি দিলে হবে না, তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে- জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণে আনতে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় অনুষ্ঠিত দুই সপ্তাহব্যাপী  সম্মেলন বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হয়। বন রক্ষায় সরকারি-বেসরকারি মিলে বরাদ্দ রয়েছে ১ হাজার ৯২০ কোটি ডলারের তহবিল। ক্ষতিগ্রস্ত জমি পুনরুদ্ধার, দাবানল নিয়ন্ত্রণ ও আদিবাসী সম্প্রদায়কে সহযোগিতা করার জন্য উন্নত দেশগুলো তহবিল বরাদ্দ পাবে। খবরে বলা হয়- ২৮ দেশের সরকার খাদ্য ও অন্যান্য কৃষিপণ্য যেমন পাম তেল, সয়া ও কোকোর মতো বৈশ্বিক বাণিজ্যের বিষয়ে এবং বন রক্ষায় একমত পোষণ করেছে। এ ধরনের কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো পশুচারণ ও শস্য উৎপাদনের জন্য গাছ কেটে উজাড় করে। বিশ্বের বড় ৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান বন উজাড়ের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোয় বিনিয়োগ বন্ধের জন্য একমত হয়েছে। কঙ্গোর বৃষ্টিপ্রধান ক্রান্তীয় বন রক্ষায় ১১০ কোটি ডলারের তহবিল বরাদ্দ করা হবে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, পৃথিবীর ‘ফুসফুস’ যে বনভূমি তা পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় এ চুক্তি হবে একটি মাইলফলক। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের জলবায়ু ও বনবিষয়ক বিশেষজ্ঞ সিমন লিউস বলেন, বিভিন্ন দেশে বন নিধন বন্ধে রাজনৈতিক সমঝোতার বিষয়টি সুসংবাদ। বন নিধন বন্ধে যথেষ্ট তহবিলও বরাদ্দ হয়েছে। জানা যায়, ব্যাপক শিল্পায়নের শুরু থেকে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার যত বেড়েছে, পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে বেড়েছে কার্বন গ্যাসের তত ঘনত্ব। আর এর প্রভাবে বাড়ছে বিশ্বের তাপমাত্রা, যা বদলে দিচ্ছে জলবায়ু, ডেকে আনছে বিপর্যয়। জলবায়ু পরিবর্তনের এ গতিকে আরও ত্বরান্বিত করছে বৃক্ষ নিধন, কারণ গাছ বিপুল পরিমাণ কার্বন-ডাইঅক্সাইড টেনে নেয় বলে বাতাসে কার্বন গ্যাসের ভারসাম্য রক্ষা করা সহজ হয়। অর্থাৎ বন ধ্বংস করে মানুষ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির পথ আরও উন্মুক্ত করে দিচ্ছে। বর্তমানে প্রতি মিনিটে ২৭টি ফুটবল মাঠের সমান বনভূমি কাটা পড়ছে পৃথিবীর মানুষের হাতে। আর গাছ কাটার মাধ্যমেও বায়ুমন্ডলে যোগ হচ্ছে বাড়তি কার্বন-ডাইঅক্সাইড।

সর্বশেষ খবর