শুক্রবার, ৫ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনায় বেকার ১০ শতাংশ মানুষ এখনো কাজ পাননি

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনায় বেকার ১০ শতাংশ মানুষ এখনো কাজ পাননি

ড. হোসেন জিল্লুর রহমান

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা বেসরকারি সংস্থা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, করোনার আঘাতে যারা বেকার হয়েছে তাদের মধ্য থেকে শতকরা ১০ জন মানুষ এখনো কাজ পাননি। তারা সুযোগের অভাবে কাজে ফিরতে পারেননি। তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা জরুরি। গতকাল ব্র্র্যাকের বিআইজিডি ও পিপিআরসির যৌথভাবে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) এবং পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) একটি জরিপের চতুর্থ ধাপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। তিনি বলেন, নতুনভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঢেউ আসার হুমকি এখনো বিদ্যমান। স্বাস্থ্যসেবা, প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিক নীতিমালার সমন্বয়ে একটি সার্বিক পদক্ষেপ না নেওয়া হলে কিছুতেই এ ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব নয়। কোনো ধরনের নীতি তৈরি না করেই বা সামান্য কিছু সাহায্য করেই সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণির মানুষদের এ অবস্থায় রাখা যাবে না। শহরে বড় আকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, সিএসএমই পুনরুদ্ধারে বাজেটসমৃদ্ধ পরিকল্পনাকে গুরুত্ব দিতে হবে। একই সঙ্গে, স্বাস্থ্যসেবায়, শিক্ষায়, যাতায়াতে ও দৈনন্দিন জীবনে ব্যয় বৃদ্ধিকে মাথায় রেখে সামষ্টিক নীতিমালা তৈরির দিকে নজর দিতে হবে। শুধু তা-ই নয়, এর সঙ্গে সঙ্গে টিকাদানের কার্যকারিতা ও সচেতনতা বাড়ানোকেও সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। জরিপে দেখা গেছে, এ বছরের মার্চের তুলনায় শহরের বস্তিবাসীর এবং গ্রামবাসীর আয় যথাক্রমে ১৮ এবং ১৫ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে, যা পুনরুদ্ধারের ধারার বিপরীত।

 অধিকাংশের মতে, সর্বশেষ লকডাউনের সিদ্ধান্ত ভালো হলেও জরিপে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় অর্ধেকই জানিয়েছেন তাদের জীবিকার সংকটের কথা। স্বল্পশিক্ষিত ও দরিদ্রদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ জানিয়েছেন, তারা প্রত্যাশিত কাজ পাননি। প্রথম লকডাউনে ৪৫ শতাংশ পরিবার সামান্য ত্রাণ পেলেও দ্বিতীয় লকডাউনে সেটি নেমে এসেছে ২৩ শতাংশে। ফলে জীবিকার যে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া চলমান ছিল, তা কিছুটা ঘুরে গেছে এবং আগস্টে মানুষের আয় করোনার আগের তুলনায় ২৩% কমেছে। এই আয় কমার হারটা শহুরে বস্তির তুলনায় গ্রামে কিছুটা কম ছিল- কভিডপূর্ব সময়ের তুলনায় তা গ্রামে ১২% কম এবং শহুরে বস্তিতে ৩০% কম। মহামারীর আগে কাজে নিয়োজিত ছিলেন এমন ১০ শতাংশ মানুষ এখনো কোনো কাজ পাননি। গবেষণায় আরও কিছু তথ্য উঠে এসেছে। অনেক ‘নতুন দরিদ্র’ পরিবার দীর্ঘমেয়াদি দারিদ্র্যে পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মহামারী আসার পর দারিদ্র্যসীমার ওপরে অবস্থানরত অন্তত ২৯ শতাংশ পরিবার দরিদ্র হয়ে পড়ে। সেই থেকে তারা নিজেদের অবস্থান এখনো উন্নত করতে পারেনি। দীর্ঘমেয়াদি এই দারিদ্র্যের কারণে পরিবারগুলোর স্বাভাবিক জীবিকা ব্যাহত হতে পারে এবং তারা দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রে পড়তে পারে। এতে আরও বক্তব্য দেন বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন।

সর্বশেষ খবর