রবিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে কর্মসূচি দেবে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি দেবে বিএনপি। পাশাপাশি দেশের অর্থনীতির সামগ্রিক দুরবস্থার চিত্র তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে সরকার পরিবেশিত ‘বানোয়াট’ তথ্য ও বিভিন্ন খাতের উৎপাদনসহ দেশের অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরা হবে বলে দলের সিনিয়র নেতারা জানিয়েছেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এসব কর্মসূচি পালন করার ব্যাপারে ইঙ্গিত দেন তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে, জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকতে চায় বিএনপি। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে গত ১৫ দিন ধরে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন ঢাকাসহ সারা  দেশে মানববন্ধনসহ নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। এরমধ্যে আবার কেরোসিন, ডিজেল ও এলপি গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। এর প্রতিবাদেও সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি দেবে দলটি। নেতারা জানান, কভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে মানুষের লড়াই অব্যাহত আছে। নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকায় কঠিন থেকে আরও কঠিন হয়ে উঠছে মানুষের জীবন-যাপন। এর মধ্যে সরকার কেরোসিন, ডিজেল ও এলপি গ্যাসের দাম বাড়ানোয় নতুন করে সংকটে পড়েছে মানুষ। দেশজুড়ে চলছে পরিবহন ধর্মঘট। বিএনপিও সরকারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে কর্মসূচি দেবে। আজ তা ঘোষণা করা হতে পারে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ প্রসঙ্গে বলেন, বর্তমান সরকার তাদের নিজেদের লোকজনের পকেট ভারী, ব্যবসা বৃদ্ধি, বাড়তি মুনাফার জন্য ডিজেলসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। কেরোসিন, ডিজেল, এলপি গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আরও বেড়েছে। মানুষ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে আগে থেকেই হিমশিম অবস্থায় ছিল। সাধারণ মানুষের ওপর এই নির্যাতন আরও বাড়িয়ে দেওয়া হলো। বিএনপি বড় রাজনৈতিক দল, জনগণের দল। তাই সরকারের এসব গণবিরোধী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আমরা অবশ্যই কর্মসূচি দেব। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে মানুষের যাতায়াত খরচ, কৃষিপণ্যের উৎপাদন ও সব পণ্যের পরিবহন ব্যয় বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়ে সব পণ্যের দামে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম যখন কম ছিল, তখন তো আমাদের দেশে দাম কমানো হয়নি। তাহলে এখন বাড়ানো হলো কেন? তিনি আরও বলেন, এই সরকার যতদিন থাকবে, ততদিন কোনো কিছুই ঠিকমতো চলবে না। এই সরকারের পতন ঘটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা গেলে দেশবাসী তাদের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক সব অধিকার ফিরে পাবে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ কেরোসিন-ডিজেল ও এলপি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সারা দেশে হরতালের মতো বড় কর্মসূচি দেওয়ার পরামর্শও দেন দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতা। তবে এখনই এই ধরনের কর্মসূচি না দেওয়ার পক্ষে মতামত প্রকাশ করেন স্থায়ী কমিটির বেশির ভাগ সদস্য। তাদের যুক্তি, হরতাল কর্মসূচি দেওয়া হলে এ সুযোগ নিয়ে ‘তৃতীয় পক্ষ’ কোনো বিশৃঙ্খলা করতে পারে। সরকারও বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন করে আরও মামলা দেওয়ার সুযোগ পাবে। তা ছাড়া সাধারণ মানুষ আর ধ্বংসাত্মক কোনো কর্মসূচি চায় না। তবে অন্যায় ও  বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা দেখতে চায়। এ জন্য জনগণ যাতে সম্পৃক্ত হয় তেমন কর্মসূচি দেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর