শিরোনাম
সোমবার, ৮ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বিদায় ভারত, সেমিতে নিউজিল্যান্ড

দুবাইয়ের কফি শপগুলোয় দুপুরের পর থেকেই ব্যাপক ভিড়। আগেই জায়গা দখল করে টিভির সামনে বসে  গেছেন ভারতীয় দর্শকরা। অথচ গতকাল ভারতের খেলা ছিল না। আবুধাবিতে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল আফগানিস্তান। এই ম্যাচটাই ছিল ভারতের ‘শেষ ভরসা’। বিশ্বকাপে টিকে থাকার শেষ আশা। আফগানিস্তান জিতলেই সৃষ্টি হতো নতুন সুযোগ। কিন্তু ভারতীয়দের আশা পূরণ হয়নি। নবী-রশিদদের ৮ উইকেটে হারিয়ে  সেমিফাইনালে উঠে গেল নিউজিল্যান্ড। আর আফগানিস্তানের হারে বিশ্বকাপ থেকে  বাদ পড়ে গেল ভারত। অবশ্য  কোহলিদের বিদায় ঘণ্টা বেজে গিয়েছিল দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারার পরই। তারপরও ক্ষীণ আশা ছিল, যদি স্কটল্যান্ড, নামিবিয়া কিংবা আফগানিস্তানের মধ্যে কোনো এক দলের বিরুদ্ধে হেরে যায় কিউইরা। কারণ, অনিশ্চয়তার টি-২০তে তো সবই সম্ভব। কিন্তু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হারার পর আরও অনেক বেশি সতর্ক হয়ে যায় কেন উইলিয়ামসনরা। একে একে চার ম্যাচে জিতে ৮ পয়েন্ট নিয়ে উঠে গেল  শেষ চারে। সেমিফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্টের এবার দেখা হয়ে গেল সেমিতে। গতকাল সম্ভাবনা ছিল আফগানিস্তানের সামনেও। কেন না স্কটল্যান্ড ও নামিবিয়াকে হারিয়ে একটা সুযোগ  তৈরি করে রেখেছিল। দরকার ছিল শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বড় জয়। উল্টো বড় হারে ভারতকে নিয়ে তারা বিশ্বকাপ মঞ্চ থেকে বিদায় নিল।

কাল প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১২৪ রান করে আফগানিস্তান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই উইকেট হারিয়ে জিতে যায় কিউইরা। এই ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের দরকার ছিল জয়। তাই শুরু থেকেই কিউই বোলাররা আফগান ব্যাটসম্যানের ওপর চড়াও হন। পাওয়ার প্লেতেতে তিন উইকেট নিয়ে যেন ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় আফগানিস্তানকে। প্রথম ছয় ওভারে ২৩ রানের বেশি করতেই পারেনি আফগানিস্তান। এরপর দলটি আর ম্যাচেই ফিরতে পারেনি। তারপরও শেষ পর্যন্ত দলের  স্কোরটা ১২৪ হয়েছিল নাজিবুলাহ জাদরানের ৭৩ রানের ক্যারিশম্যাটিক ইনিংসের জন্য। এ ছাড়া কোনো ব্যাটসম্যান সুবিধা করতে পারেননি। এ ম্যাচেও দুর্দান্ত  বোলিং করেছেন নিউজিল্যান্ডের পেসাররা। ট্রেন্ট বোল্ট ও অ্যাডাম মিলনি তাদের চার ওভারের কোটায় মাত্র ১৭ রান করে দিয়েছেন। দারুণ বোলিং করছেন টিম সাউদি ও জিমি নিশাম। তবে রান দিতে কিপটেমির পাশাপাশি তিনটি উইকেট নেওয়ায় ম্যাচসেরা পুরস্কার জিতেছেন বোল্ট। এই ম্যাচে কিউই ব্যাটসম্যানদের কাজটা খুবই সহজ করে দিয়েছিলেন তাদের বোলাররা। টি-২০তে ১২৫ রানের টার্গেট কি কঠিন কিছু নাকি! তবে পাওয়ার প্লে-তে ৪৫ রান তোলার পর আরও সহজ হয়ে যায়। এরপর বাইশগজে যেন প্রাকটিসের আমেজে সময় কাটিয়ে জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক উইলিয়ামসন। তিনি ৪২ বলে করেন অপরাজিত ৪০ রান, আরেক ব্যাটসম্যান ডেভন কনওয়ে ৩৬ রানে নটআউট। ম্যাচ শেষে উইলিয়ামসন বলেন, ‘আমরা জানি, টি-২০তে আফগানিস্তান কতটা ভয়ংকর! তবে আমরা খুবই ভালো খেলেছি। দারুণ এক জয় পেয়েছি। এখন সামনে আরেকটি কঠিন দল-ইংল্যান্ড। আমাদের একটাই লক্ষ্য থাকবে নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দেওয়ার।’ এই টুর্নামেন্টে দারুণ খেলেও বিদায় নিতে হলো আফগানদের। হারের পর অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী বলেন, ‘আমাদের টার্গেট ছিল অন্তত ১৫০-১৬০ রান করব। কিন্তু প্রথমে ব্যাটিং বিপর্যয়ের জন্য হয়নি। তবে পুরো টুর্নামেন্টে আমরা অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছি। ভুলের কারণে হারলেও এখান থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। এখানে ইতিবাচক অনেক কিছু আছে, যা ভবিষ্যতে আরও ভালো খেলতে সহযোগিতা করবে।’ কাল আফগানিস্তানের হারে যেমন ভারতের বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল, তেমনি সেমিফাইনালের সূচিও ঠিক হয়ে গেল। ১০ নভেম্বর প্রথম সেমিফাইনালে আবুধাবিতে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড। ১১ নভেম্বর দুবাইয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলবে অস্ট্রেলিয়া।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর