শিরোনাম
শুক্রবার, ১২ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিশ্বকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

পাশে থাকার আশ্বাস ফরাসি নেতাদের । ফ্রান্সের সঙ্গে তিন চুক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিশ্বকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়াতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে শিগগিরই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্‌বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন ‘এইসব (রোহিঙ্গা) মানুষ যাতে দ্রুত মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারে তা নিশ্চিত করতে বিশ্বকে অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে কাজ করতে হবে। অন্যথায়, সংকট থেকে তৈরি নিরাপত্তা ঝুঁঁকি শুধু আমাদের সীমানায় সীমাবদ্ধ থাকবে না। আমরা ইতিমধ্যে এর লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি।’ গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকালে প্যারিস পিস ফোরাম, ২০২১-এর চতুর্থ সংস্করণ ‘মাইন্ডিং দ্য গ্যাপ : ইমপ্রæভিং গ্লোবাল গভর্নেন্স আফটার কভিড-১৯’-এ ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এ আহ্‌বান জানান। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে এটি অনুষ্ঠিত হয়। শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিয়ে একটি বড় আঞ্চলিক সংকট এড়াতে সাহায্য করেছে বাংলাদেশ। তাদের মধ্যে এক মিলিয়নেরও বেশি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হচ্ছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে অবশ্যই সবার জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধির এলাকা হতে হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ অঞ্চলের জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হলো এটিকে অবাধ, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক করা।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আমরা এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে কমিউনিটি স্তরে বিনিয়োগ করে যাচ্ছি।’ তিনি বলেন, বহু বছর ধরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সৈন্য ও পুলিশ দিয়ে অবদান রাখা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষে রয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ায় ফিলিস্তিনিদের সমর্থনের মাধ্যমে তাঁর দেশ সেই অবস্থান ধরে রেখেছে। তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী অস্ত্র প্রতিযোগিতার জন্য ব্যবহৃত সম্পদ আমি টেকসই উন্নয়নের জন্য ব্যবহারের আহ্‌বান জানাই।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, কভিড-১৯ মহামারী আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ও আর্থিক ব্যবস্থার গভীরে চলমান দুর্বলতাগুলো উন্মোচিত করেছে। এটি আবারও ধনী গরিবের মধ্যকার ব্যবধান ঘুচিয়ে দিয়েছে। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে এবং সেই ফাঁক বন্ধ করতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, লাখ লাখ মানুষকে বাইরে রেখে পৃথিবীকে টিকা সুরক্ষিত করা সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সীমান্তে আটকে পড়া শত শত অভিবাসীর সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। আমাদের অবশ্যই জাতি, বর্ণ এবং জাতিগত ভিত্তিতে বৈষম্যের অবসান ঘটাতে হবে। আমাদের মহিলা এবং মেয়েদের সব কাচের দেয়াল ভাঙার অনুমতি দিতে হবে। আমাদের সবার জন্য উপযুক্ত কাজের সুযোগ তৈরি করতে হবে। আমাদের কাজ এবং সম্পদের সঙ্গে আমাদের কথার মিল রাখতে হবে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটি আইন ভিত্তিক বহুপক্ষীয় পদ্ধতি থাকতে হবে যা অবশ্যই সব মানুষের জন্য ন্যায্য এবং অর্থবহ হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে সারা বিশ্বে শান্তিই জাতীয় নিরাপত্তার সর্বোত্তম গ্যারান্টি। ‘আমরা দ্ব›েদ্বর পথ এড়িয়ে চলি এবং বিরোধের প্রশান্ত মীমাংসা চাই’। তিনি উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশ তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে স্থল ও সমুদ্রসীমা সমস্যা আলোচনা ও আইনসম্মত উপায়ে সমাধান করেছে। আমরা আমাদের ভূমিকে অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে ক্ষতিকর কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করতে দেব না।’ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এই ফোরাম আহ্‌বান করেন এবং ফোরামের সভাপতি প্যাসকেল ল্যামি অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি এবং মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

রিমোট লার্নিং, অনলাইন এডুকেশনকে বৈশ্বিক জনসম্পদ ঘোষণার আহ্‌বান : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনেস্কোকে রিমোট লার্নিং এবং অনলাইন শিক্ষাকে বৈশ্বিক জনসম্পদ হিসেবে ঘোষণা করার আহ্‌বান জানিয়েছেন। কারণ অনলাইন শিক্ষা কভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন একটি ‘নতুন স্বাভাবিক’ হিসেবে বিকশিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারী চলাকালীন সংস্থান এবং প্রযুক্তির অভাব স্কুলে ভর্তির সাক্ষরতার হার এবং যুব ও প্রাপ্তবয়স্কদের শেখার ক্ষেত্রে আমাদের কয়েক দশকের অর্জনকে বিপন্ন করে তুলেছে। রিমোট লার্নিং এবং অনলাইন এডুকেশনকে বিশ্বজনীন সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করার জন্য আমি এ আগস্ট বডিকে (ইউনেস্কো) আহ্‌বান জানাই।’ গতকাল ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ইউনেস্কোর ৪১তম সাধারণ সম্মেলনে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্‌বান জানান। তিনি ইউনেস্কোকে সরকার, বেসরকারি খাত এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে অংশীদারি ও সম্পদের সমাবেশ করার জন্য অগ্রাধিকারের বিষয় হিসেবে কাজ করার আহ্‌বান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটালাইজেশন উন্নত পরিষেবা এবং তথ্যের অবাধ প্রবাহ বাড়িয়েছে, তবে ক্ষতিকারক বিষয়বস্তু এবং ঘৃণাত্মক বক্তব্য ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ডিজিটাল সরঞ্জাম ও প্ল্যাটফরমের অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বিশ্বের আরও অনেক দেশের জন্যই একটি প্রাণঘাতী বাস্তবতা। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর নেতৃস্থানীয় কণ্ঠস্বর হিসেবে আমরা উচ্চাভিলাষী জলবায়ু অঙ্গীকার গ্রহণ করেছি। আমরা ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের বিদেশি বিনিয়োগের ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল করেছি এবং আমরা আশা করি যে দেশগুলো বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য বেশি দায়ী তারা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে।’ তিনি ইউনেস্কোকে জলবায়ু শিক্ষার ওপর আরও বেশি জোর দেওয়ার এবং জলবায়ু চ্যালেঞ্জের বিষয়ে বৃহত্তর সচেতনতা ও সংবেদনশীলতা বাড়াতে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সহায়তা করার আহ্‌বান জানান। তিনি ইউনেস্কোকে বাংলাদেশের সত্যিকারের বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার মহান আত্মত্যাগকে চিহ্নিত করে ২১ ফেব্রুয়ারি ‘শহীদ দিবস’ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’

ফ্রান্সের সঙ্গে বাংলাদেশের তিন চুক্তি : কভিড ব্যবস্থাপনা, পানি ও বিমান চলাচল খাতে আর্থিক সহায়তা ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বাড়াতে ফ্রান্সের সঙ্গে তিনটি চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। প্যারিসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলমান সফরে এসব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। অন্যদিকে, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে পদক্ষেপ নিতে ফ্রান্সের প্রতি আহ্‌বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। জবাবে রোহিঙ্গা সংকটের শেষ পর্যন্ত সব প্রয়োজনে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন ফ্রান্সের নেতারা। বার্তা সংস্থা বাসসের খবরে বলা হয়- অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন গতকাল প্যারিসে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, একটি চুক্তির আওতায় করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবিলায় বাজেট সহায়তা হিসেবে ২০ কোটি ইউরো দেবে এজেন্সি ফ্রান্স ডেভেলপমেন্ট (এএফডি)। এ ছাড়া ঢাকা এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্পে ফ্রান্স নতুন করে ১৩ কোটি ইউরো দেবে। চলমান এ প্রকল্পে আগে ৩ কোটি ইউরো দিয়েছিল দেশটি। ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, অর্থাৎ আজকে আমরা স্বাক্ষর করলাম ৩৩০ মিলিয়ন ইউরোর চুক্তি। এখন পর্যন্ত আমরা যে সহায়তা (ফ্রান্সের কাছ থেকে) পেয়েছি, তা ছিল ৮০০ মিলিয়ন ইউরো। এটা যোগ হওয়ার পর আমাদের সহায়তা ১ বিলিয়ন ইউরো অতিক্রম করল। ইআরডি সচিব বলেন, এএফডি বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে ২০১২ সাল থেকে। গত তিন বছরে বাংলাদেশের জন্য তাদের সহায়তার পরিমাণ ‘অনেক বেড়েছে’। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং ফ্রান্সের এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্টের পরিচালক (এশিয়া) ফিলোপে অরলিঁয়ে দুই দেশের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এবং ফ্রান্স সিভিল এভিয়েশন অথরিটির মধ্যে কারিগরি সহযোগিতা বাড়াতে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এটা মূলত এভিয়েশন সেন্টারে নলেজ শেয়ারিং এবং ট্রেনিং বিষয়ক যে সহযোগিতা তাকে আরও বাড়িয়ে দেবে। তার সঙ্গে সঙ্গে আমরা যৌথভাবে এভিয়েশন সেফটিসহ বিভিন্ন বিষয়ে জয়েন্ট ইভেন্ট আয়োজন করতে পারব।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে পদক্ষেপ নিতে ফ্রান্সের প্রতি আহ্‌বান : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, ফ্রান্স জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ায় এ পরিষদে রোহিঙ্গা ইস্যুতে পদক্ষেপ নিতে ফ্রান্সের প্রতি আহ্‌বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। বুধবার প্যারিসে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফ্রান্সের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলোচনা চলাকালে এ আহ্‌বান জানানো হয়। এ ব্যাপারে ফ্রান্স আশ্বাস দিয়ে বলেছে, তারা রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের পাশে থাকবে। মোমেন বলেন, ফ্রান্সের সব নেতার সঙ্গে বিশেষ করে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক চলাকালে রোহিঙ্গা ইস্যুর ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফ্রান্সের নেতাদের অবহিত করা হয় যে বাংলাদেশ এ সংকটের সমাধানে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা দ্বিপক্ষীয়, ত্রিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয়ভাবে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি। এমনকি আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেও (আইসিটি) গিয়েছি। আমরা ফ্রান্সের নেতাদের বলেছি, পশ্চিমা বিশ্ব মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু তারা মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি বন্ধ করে দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে ফ্রান্সের প্রশ্ন, সামরিক সরকার চলাকালে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার জন্য সংলাপের ব্যাপারে অগ্রসর হওয়া সম্ভব হবে কি না। আমরা তাদের বলেছি, ১৯৭০ ও ১৯৯০-এর দশকে মিয়ানমারে সামরিক সরকার ছিল। কিন্তু ওই সময় তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন করেছে। আমরা ফ্রান্সকে বলেছি, চার বছর ধরে দেশটির রাখাইন রাজ্যে কোনো সংঘাত ঘটেনি। এখানে কোনো সহিংসতা হয়নি। কাজেই রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর এখন উপযুক্ত সময়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফ্রান্সের নেতারা বাংলাদেশের কাছে জানতে চেয়েছে রোহিঙ্গা ইস্যুর ব্যাপারে আসিয়ানকে কিছু জানানো হয়েছে কি না। আমরা উত্তরে বলেছি, অবশ্যই, আমরা আসিয়ানকে জানিয়েছি। ফ্রান্স বলেছে, তারা আসিয়ানের সঙ্গে কথা বলেছে। তারা আসিয়ানকে এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্‌বান জানিয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ ক্ষেত্রে আসিয়ানের ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং সংস্থাটি কোনো সদস্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কোনো কিছু বলতে পারে না। বাংলাদেশ এ ইস্যুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ফ্রান্সের নেতাদের পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন।

ফ্রান্সের সিনেটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা : ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খন্দকার মোহাম্মদ তালহা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ফ্রান্সের সিনেটে যান। তিনি সেখানে গেলে সিনেট সদস্যরা উঠে দাঁড়িয়ে করতালির মাধ্যমে তাঁকে স্বাগত জানান। পরে তাঁর ভূমিকা ও নেতৃত্বের প্রশংসা করে একটি মানপত্র পাঠ করা হয়। ফরাসি সিনেটে বাংলাদেশবিষয়ক গ্রুপের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী। ওই গ্রুপের সদস্যদের অনেকে এর আগে বাংলাদেশ সফর করেছেন। সে বিষয়েও তাঁদের সঙ্গে সরকারপ্রধানের কথা হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোসহ রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে একটা সম্যক ধারণা পেয়েছেন।

সর্বশেষ খবর