মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

টিকা উৎপাদন ও অন্য দেশকে দিতে সক্ষম বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

টিকা উৎপাদন ও অন্য দেশকে দিতে সক্ষম বাংলাদেশ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, টিকা উৎপাদন করে অন্য দেশকে দেওয়ার সক্ষমতা বাংলাদেশের রয়েছে। করোনা মোকাবিলায় আমাদের যে সাফল্য, তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আমরা পেয়েছি।

গতকাল একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনে এক সাধারণ আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু সম্মেলনে গিয়ে আমি বলে এসেছি আমরা নিজেরা টিকা তৈরি করতে চাই। টিকা তৈরিতে যে বাধাগুলো আছে, সেগুলো সরিয়ে দিতে হবে। এটি উন্মুক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের সুযোগ দিলে আমরাও টিকা উৎপাদন করব। আমাদের সেই সক্ষমতা আছে। সে জন্য জমিও কিনে রেখেছি। আমরা কিন্তু উদ্যোগ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে পুরস্কার চালু করায় ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানাতে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাবেক প্রধান হুইপ আবদুস শহীদ সাধারণ আলোচনার জন্য জাতীয় সংসদে একটি প্রস্তাব তোলেন। প্রস্তাবে বলা হয়, জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনার মাধ্যমে ইউনেস্কোকে বাংলাদেশের সব জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানানো হোক। এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন সরকারি ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। আলোচনা শেষে সংসদে তা সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়। প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে দেশের অর্থনীতি উন্নয়নে জাতির পিতার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু হত্যা-পরবর্তী সময়কালের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ’৭৫-এর পর আমরা কী দেখেছি? ১৯টি ক্যু হয়েছে। হাজার হাজার সেনাবাহিনীর অফিসার ও সৈনিক, বিমান বাহিনীর অফিসার ও সৈনিক এবং সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। কারাগারে ফেলে রাখা হয়েছে, নির্যাতন চলেছে। তিনি বলেন, সে সময় গুলি-অস্ত্র, দুর্নীতি এটাই ছিল জননীতি। এর বাইরে একটা দেশকে যে উন্নত করা যায়, সেদিকে কোনো আন্তরিকতাই আমরা দেখিনি। আমি বাংলাদেশে আসার পর কী দেখেছি। বিজ্ঞান পড়েই না মানুষ। বিজ্ঞানের প্রতি কোনো আগ্রহ নেই। গবেষণা তো ছিলই না। কোনো বিশেষ বরাদ্দও ছিল না। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এখন আমরা পিছিয়ে নেই। আমি ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশের জনগণকে। তারা বারবার আমায় ভোট দিয়েছে। সেবা করার সুযোগ দিয়েছে। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। এক দশকের ভিতরে বাংলাদেশের পরিবর্তন সারা বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছে। বাংলাদেশের কাউকে বিদেশে গিয়ে কথা শুনতে হয় না। উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকসহ আমাদের কিছু ইয়ং সংসদ সদস্য মিলে ইয়ংবাংলা স্টার্টআপ প্রোগ্রাম নিয়েছে। এ প্রোগ্রামের জন্য আমরা বিশেষ বরাদ্দও রেখেছি। ছেলেমেয়েরা যদি কেউ উদ্যোগ নিতে চায় আমরা তাদের পাশে দাঁড়াব। অনলাইনে কেনাবেচা, ই-কমার্স, টেন্ডার এগুলো তো হয়েছে বাংলাদেশে। সামনে আরও সময় আছে। আরও হবে। এক দিনে তো হয় না। ধাপে ধাপে হয়। ‘মোটিভ ক্রিয়েশন’ নামে উগান্ডার একটি সংগঠন এবারের ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ পুরস্কার পেয়েছে। প্যারিসে ইউনেস্কো সদর দফতরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পুরস্কার তুলে দেন। এ পুরস্কার দেওয়া হবে প্রতি দুই বছরে একবার, যার আর্থিক মূল্য ৫০ হাজার ডলার। উগান্ডার ‘মোটিভ ক্রিয়েশন’র প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক দিন ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশেরও কোনো না কোনো উদ্যোক্তা এ পুরস্কার পাবে বলে আমি আশা করি। বঙ্গবন্ধুর নামে পুরস্কার প্রবর্তন করায় ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর আগে এই আলোচনায় অংশ নেন আমির হোসেন আমু, বেগম মতিয়া চৌধুরী, রাশেদ খান মেনন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, জি এম কাদের, নুরুল ইসলাম নাহিদ, এ কে আবদুল মোমেন, দীপু মনি, জুনাইদ আহমেদ পলক, ওয়াসিকা আয়শা খান, মুজিবুল হক চুন্নু, হারুনুর রশীদ, রুস্তম আলী ফরাজী ও পীর ফজলুর রহমান।

সর্বশেষ খবর