মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

তরুণদের আসরে বুড়োদের বিশ্বজয়

বায়ো-বাবলের বিশ্বকাপ শেষ

টি-২০ ক্রিকেট হচ্ছে তরুণদের খেলা! এখানে স্কিলের পাশাপাশি সবচেয়ে দরকার হয় পেশি শক্তির। ব্যাটিং, বোলিং কিংবা ফিল্ডিং -তিন বিভাগেই নাকি তরুণদের বেশি প্রাধান্য থাকে। কিন্তু এবারের টি-২০ বিশ্বকাপে ঘটে গেল উল্টো ঘটনা। বুড়োদের দল অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল। এমনকি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন ৩৬ বছরে পা রাখা ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নার।

ওয়ানডেতে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া টি-২০তে প্রথম শিরোপা ঘরে তুলল। অথচ অসিদের বিশ্বকাপ দল ঘোষণার পর কত জল্পনা-কল্পনা। কারণ, অস্ট্রেলিয়া দলে সবাই অভিজ্ঞ। প্রায় সব ক্রিকেটারই বয়স্ক। তা ছাড়া বিশ্বকাপের ঠিক আগের সফরেই এই দলটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশে গিয়ে বিপর্যয়ে পড়েছিল। টাইগারদের বিরুদ্ধে সব শেষ সিরিজে তো ৪-১ ব্যবধানে হারে। এর আগেও আরও কয়েক সিরিজে তারা ভালো করতে পারেনি। দলের সেরা ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নারকে তো বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে এই সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে অনুষ্ঠিত আইপিএলে উপেক্ষাই করল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। বেশি বয়স হয়ে গেছে, ফর্ম নাই, ওয়ার্নারের ব্যাটিং স্লো হয়ে গেছে -নানা অজুহাতে একাদশেই রাখা হলো না। এরপর ওয়ার্নারদের মতো অভিজ্ঞদের নিয়ে যখন অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণা হয় তখন ভক্তরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক ট্রল করেছিল। তরুণদের বিশ্ব আসরে অস্ট্রেলিয়া কেন বুড়োদের দল পাঠাচ্ছে? সব সমালোচনা উপেক্ষা করে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড অভিজ্ঞদের ওপর ভরসা রাখল। অবশেষে অভিজ্ঞরাই অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন পূরণ করে দিল।

অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বজয়ের মধ্য দিয়ে মরুদ্যানে ভাঙলো মিলন মেলা। এবারের আসরটা করা ছিল আইসিসির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। করোনা মহামারীর জন্য পরিস্থিতি ছিল খুবই ভয়ংকর এবং চ্যালেঞ্জিং। আগের বছর অস্ট্রেলিয়ায় হওয়ার কথা ছিল আসরটি, কিন্তু সম্ভব হয়নি। এই বছর তা ভারতের মাটিতে করা সিদ্ধান্ত ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা আইসিসি। কিন্তু ভারতে করোনার নতুন ভেরিয়েন্টের কারণে ভেন্যু পরিবর্তন করে মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বেছে নেওয়া হয়। এরপরও পরিস্থিতি সহজ ছিল না। ক্রিকেটার ও ম্যাচ সংশ্লিষ্টদের রাখা হয় বায়ো-সিকিউর বাবলে এবং মিডিয়াসহ দর্শকের পিসিআর টেস্ট করিয়েই প্রতি ম্যাচে মাঠে ঢুকতে হতো। নিরাপত্তাকর্মীদেরও করোনার কারণে বাড়তি সতর্ক থাকতে হয়েছে। অনেক বাধা-বিপত্তির পরও দারুণভাবেই করোনার মাঝে সফলতার সঙ্গে বিশ্বকাপের আয়োজন সম্পন্ন করল আইসিসি।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিস্ময়কর ক্রীড়া নগরী ‘দুবাই স্পোর্টস সিটি’র দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ফাইনালের মধ্য দিয়ে পর্দা নামল বিশ্বকাপের। তবে টি-২০ বিশ্বকাপের পরের আসর আগামী বছর ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ায়। করোনা মহামারীর কারণে পেছানোর ক্রিকেটের সূচিতে যে জট লেগেছিল তা কমিয়ে আনতে পরপর দুই বছর দুই বিশ্বকাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইসিসি। টানা দুই বছর বিশ্বকাপের মতো আসরের আয়োজন রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং। প্রথম চ্যালেঞ্জে এসেছে সাফল্য, এখন পরের চ্যালেঞ্জের জন্য অপেক্ষা। গুডবাই সংযুক্ত আরব আমিরাত, দেখা হবে অস্ট্রেলিয়ায়!

সর্বশেষ খবর