বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বাংলাদেশি স্থপতি পেলেন সম্মানজনক সন পদক

প্রতিদিন ডেস্ক

বাংলাদেশি স্থপতি পেলেন সম্মানজনক সন পদক

বাংলাদেশের স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম জিতে নিলেন যুক্তরাজ্যের মর্যাদাপূর্ণ সন পদক-২০২১। লন্ডনের স্যার জন সন জাদুঘর কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর এ পুরস্কারে ভূষিত করেন একজন স্থপতিকে তার কাজের মূল্যায়ন ও স্বীকৃতিস্বরূপ। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান। স্থানীয় সময় ১৬ নভেম্বর এ পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে এ  সম্মানে ভূষিত হন রাফায়েল মনেও, ডেনিস স্কট ব্রাউন ও কেনেথ ফ্রাম্পটন। সম্প্রতি জলবায়ুবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন কপ২৬ শেষ হওয়ার পরপরই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্যার জন সন জাদুঘর কর্তৃপক্ষ তাঁর এ ধারণার প্রতি সম্মান জানিয়ে সন পুরস্কারে ভূষিত করে তাঁকে। বাংলাদেশের উপকূলের মানুষের প্রকৃতির সঙ্গে লড়াইটা অন্যরকম, বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে। তবে মাঝেমধ্যে এমন কিছু ঘটে যা তাদের জীবনকে আনন্দময় করে তোলে। প্রতি বছর জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চল যেখানে দেশের তিনটি প্রধান নদী একত্র হয়, সেখানকার পানি ফুলে-ফেঁপে ওঠে। নদীর পানি উপচে সৃষ্ট বন্যা বিপর্যয় ডেকে আনে। হিমালয় থেকে হিমবাহের প্রবাহের সঙ্গে যুক্ত হয় প্রবল বৃষ্টিপাত। বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে হিমবাহ গলে যাওয়ার হার আরও বেড়েছে। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই থাকে। বন্যার কবলে পড়ে রাতারাতি ঘরবাড়ি, জীবিকা হারিয়ে যায়। অনেক সময় পলি জমে সৃষ্টি হয় নতুন ভূমি, যাকে বলা হয় ‘চর’। মেরিনা তাবাসসুমের কাছে এটা সত্যিকার অর্থে ভূমি নয়। তিনি বলেন, এটাকে ভূমি বলা যায় না। এটা ভেজা। এটা নদীর অংশ। কিন্তু কয়েক বছর পর এটা আশ্রয়হীন মানুষের কাছে পরিত্রাণের জায়গা হয়ে ওঠে। এটাই তাদের মাছ ধরার, চাষাবাদ করার ও পরিবার নিয়ে থাকার সুযোগ করে দেয়। মেরিনা এ বদ্বীপ অঞ্চল নিয়ে কাজ শুরু করেন গত বছর যখন করোনা মহামারীর মধ্যে মানুষের জীবন স্থবির হয়ে পড়ে। তিনি ঢাকায় বসে পরিকল্পনা করে ফেলেন কীভাবে ভাগ্যের বদল ঘটানো যায় এসব প্রতিকূল পরিবেশে থাকা মানুষের। তিনি বলেন, একজন স্থপতি হিসেবে এসব মানুষের প্রতি আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। অবকাঠামোগত শিল্পায়ন বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের ক্ষেত্রে অর্ধেক অবদান রাখে। কিন্তু উপকূলীয় অঞ্চলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের এতে ভূমিকা শূন্য। মেরিনা ১৯৬৯ সালে রাজধানী ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা একজন চিকিৎসক ছিলেন। ১৯৯৫ সালে তিনি স্থাপত্যবিদ্যায় স্নাতক সম্পন্ন করেন। মেরিনা সুলতানি আমলের স্থাপত্যের আদলে নকশা করেন বায়তুর রউফ মসজিদ। এটি ২০১২ সালে ঢাকায় নির্মিত হয়। শৈল্পিক নকশার এ মসজিদের জন্য ২০১৮ সালে স্থপতি হিসেবে জামিল প্রাইজ পান তিনি। এর আগে একই নকশার জন্য ২০১৬ সালে তিনি সম্মানজনক আগা খান পুরস্কার লাভ করেন।

সর্বশেষ খবর