শুক্রবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
দুই বিচারপতির মতপার্থক্য

দিনভর বিচার বন্ধ বেঞ্চ পুনর্গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুদকের একজন কর্মকর্তাকে সার্বক্ষণিক হাই কোর্টে রাখা নিয়ে দুই বিচারপতির মতপার্থক্যে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় বিচার কাজ। এরপর সারা দিন আর ওই বেঞ্চের কার্যক্রম চলেনি। গতকাল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্টের ভার্চুয়াল দ্বৈত বেঞ্চে এমন ঘটনা ঘটে। পরে রাতে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আগামী রবিবারের কার্যতালিকায় দেখা যায় ওই দ্বৈত বেঞ্চসহ দুটি বেঞ্চ পুনর্গঠন করা হয়েছে। সূত্র জানায়, সকালের ঘটনাটি বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি প্রধান বিচারপতিকে অবহিত করেছেন। এরপরই বেঞ্চ পুনর্গঠন করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইট অনুযায়ী,  পুনর্গঠিত বেঞ্চে বিচারপতি এম এস মজিবুর রহমানের পরিবর্তে বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হক যুক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চে বিচারপতি এম এস মজিবুর রহমানকে যুক্ত করা হয়েছে। গতকাল শুনানিতে যুক্ত একাধিক আইনজীবী জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কার্যক্রম শুরু হলে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, বুধবার আদালত মৌখিকভাবে আদেশ দিয়েছিল (সার্বক্ষণিক দুদকের একজন কর্মকর্তাকে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে রাখা)। তবে এখন কমিশনে জনবলের সংকট আছে। সার্বক্ষণিক একজন লোক দিতে কিছুটা সময় লাগবে। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, কখনো কখনো দুদকের আইনজীবী থাকেন না। আদালতের আদেশ যথাযথভাবে দুদকে কমিউনিকেটও হয় না। খুরশীদ আলম খান বলেন, কর্মকর্তা না দেওয়া পর্যন্ত দুদকসংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাকে জানানো হলে, তিনি তা দুদককে অবহিত করবেন। এ সময় বেঞ্চে অপর বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমান বলেন, দুদকের কি আর কাজ নেই। একজন অফিসার এখানে এসে বসে থাকবেন। নেতৃত্বদানকারী বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, সেকেন্ড জজ এত কথা বললে সমস্যা। আদালতের ডেকোরাম আছে। জবাবে অপর বিচারপতি বলেন, তাহলে বেঞ্চে দুই বিচারপতি রাখার দরকার কী? একপর্যায়ে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এজলাস ত্যাগ করেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ‘কানিজ ফাতেমা বনাম রাষ্ট্র এবং অন্য’ শিরোনামে ১৭ নভেম্বর ওই বেঞ্চের কার্যতালিকার ৪ নম্বর ক্রমিকে ফৌজদারি বিবিধ মামলা ছিল। ক্রমানুসারে মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে দুদকের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। রাষ্ট্রপক্ষের মাধ্যমে অবহিত হয়ে দুদকের সমন্বয়ক আবদুস সালাম ভার্চুয়ালি আদালতে যুক্ত হন। দুদকের পক্ষে ওই মামলা পরিচালনার জন্য নতুন করে একজন আইনজীবীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে আদালতকে জানান তিনি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুদকের পক্ষ থেকে আইনজীবী না থাকা ও অনেক সময় আদালতের আদেশ দুদকে যথাযথভাবে কমিউনিকেট না হওয়ার বিষয়টি শুনানিতে আসে। পরে সার্বক্ষণিক দুদকের একজন কর্মকর্তাকে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে রাখতে মৌখিকভাবে বলা হয়। ভার্চুয়াল আদালতের কার্যক্রম শুরুর আগে বেঞ্চটিতে দুদকের একজন প্রতিনিধি উপস্থিত থাকতেন।

সর্বশেষ খবর