হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে বেগম জিয়ার চিকিৎসার খোঁজ নেন গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া এবং সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর। এ সময় তারা খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে দুই নেতা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হয়রানি না করে তাঁর মুক্তির ব্যবস্থা করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। তারা অসুস্থ খালেদা জিয়াকে তাঁর পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী দেশে বা বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি চাইলে তাঁকে দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা দিতে হবে। কারণ তিনি ‘ডিকম্পেনসেটেড লিভার’ রোগে ভুগছেন। সহজ ভাষায়- তাঁর লিভারের সমস্যা খুবই তীব্র। এভারকেয়ার হাসপাতালে তথা বাংলাদেশে বিদ্যমান সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এখন তাঁর জন্য ‘অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট’ অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে, যা বাংলাদেশে নেই। গত ১২ নভেম্বর রক্ত বমি হওয়ার পর ক্রনিকলিভার রোগে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি প্রথম চিকিৎসকদের নজরে আসে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে, তাঁর লিভার সমস্যাটা খুবই জটিল। এ ধরনের সমস্যায় লিভার অকার্যকরও হয়ে যেতে পারে। তখন লিভার প্রতিস্থাপনও করতে হয়। এ ছাড়া তাঁর রক্তে শর্করা অনেক বেশি। রক্তচাপ ওঠানামা করছে। এত জটিল রোগ, তার সঙ্গে বয়স-এসব কিছুর বিবেচনায় বাংলাদেশে তাঁর উন্নত চিকিৎসা সম্ভব নয়। এ জন্য দেশের বাইরে নিতে হবে। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনও একই মতামত ব্যক্ত করেন। ড. রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক নূর বিবৃতিতে বয়স ও শারীরিক জটিলতা বিবেচনায় আইনের মারপ্যাঁচ না দেখিয়ে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তারা বলেন, খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। যিনি নিজেও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের বৃহৎ একটি রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসন। নেতৃদ্বয় সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, তাঁর চিকিৎসায় যথাযথ পদক্ষেপ নিন। বিনা চিকিৎসায় খালেদা জিয়া মারা গেলে এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন হবে।