শুক্রবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ধর্মকে ইস্যু করে দেশ অস্থিতিশীল করা হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ধর্মকে ইস্যু করে দেশ অস্থিতিশীল করা হচ্ছে

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতি ও নিরপেক্ষতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। হাটহাজারীতে কালীমন্দির ও হাটহাজারী মাদরাসা দুটি পাশাপাশি। মাঝখানে একটি দেয়াল। গত ১০০ বছরে কোনো ঘটনা ঘটেনি। অনুরোধ থাকবে, আমরা ধর্মকে ইস্যু করব না। এটা চলবে না। এটাকে ইস্যু করে এই সমাজকে অস্থিতিশীল করবেন না। ধর্মকে যারা ইস্যু করছেন, তারা দেশের জন্য কাজ করছেন না। দেশকে অস্থিতিশীল করছেন। এটা অমঙ্গল বয়ে আনবে।’ স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল সংসদের বৈঠকে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’ উপলক্ষে বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার সংসদে বিশেষ আলোচনার প্রস্তাব উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে সংসদে স্মারক বক্তৃতা দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আলোচনায় অংশ নেন সরকারি ও বিরোধীদলীয় এমপিরা। সংসদের বিরোধীদলীয় এমপি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ধর্মনিরপেক্ষতার উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘আজকে সরকারি চাকরি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ব্যবস্থায়  কোনো পক্ষপাতিত্ব আছে? কোথাও কোনো পক্ষপাতিত্ব নেই।’ চট্টগ্রামের হাটহাজারী এলাকা থেকে নির্বাচিত প্রবীণ এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘হাটহাজারী নিয়ে অনেক কথা বলা হয়। হেফাজত নিয়ে অনেক কথা হয়। সেই হাটহাজরীতে কালীমন্দির ও হাটহাজারী মাদরাসা দুইটা পাশাপাশি। মাঝখানে একটি দেয়াল। গত ১০০ বছরে কোনো ঘটনা ঘটেনি।’ তিনি বলেন, ৫০ বছরে দেশ এগিয়ে গেছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিচার বিভাগ নিরপেক্ষ করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ করতে হবে। এই কাজগুলো আমাদের করতে হবে। দেশের অর্জনকে ধরে রাখার জন্য তিনি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী কারার পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মূল হচ্ছে নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে সম্পূর্ণরূপে নিরপেক্ষ করতে হবে। এর জন্য যে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার দরকার, সেগুলো শক্তিশালী করতে হবে। নইলে প্রধানমন্ত্রী যে অর্জন করেছেন, তা ভবিষ্যতে ধরে রাখা যাবে না। সাবেক মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা আমাদের রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম নিয়ে কথা বলেন। এটাকে ইস্যু করেন। অথচ ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির সবচেয়ে উদাহরণ যুক্তরাজ্য। কিন্তু সেখানে প্রোটেস্ট্যান্ট না হলে রাজা কিংবা রানী হতে পারবেন না। যুক্তরাষ্ট্রে একজন প্রেসিডেন্ট বাইবেলের ওপর শপথ গ্রহণ করেন। আমরা কোনো ধর্মীয় গ্রন্থের ওপরে হাত রেখে শপথ নিই না। রাষ্ট্র পরিচালনা করি না।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতি ও ধর্মীয় নিরপেক্ষতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা যারা এই প্রশ্ন করি, এটা দুঃখজনক। কারণ কিছু মানুষের কুকীর্তির জন্য সমস্ত জাতি এর গ্লানি বহন করতে পারে না।’ তিনি বলেন, ‘যারা ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। তাহলে আমাদের দেশে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তা ঘটবে না।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর