বুধবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

শক্তিশালী ইসি ও যোগ্যদের মনোনয়ন দিতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

শক্তিশালী ইসি ও যোগ্যদের মনোনয়ন দিতে হবে

মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন

সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন বলেছেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যতগুলো সংস্থা কাজ করে তার সবই দুর্বল হয়ে পড়েছে। যেমন নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকার, রাজনৈতিক দল। তিন ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সারা দেশে এ পর্যন্ত সংঘাত-সহিংসতায় ৭৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এখনো ভোট নিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলছে খুনোখুনি। এত হানাহানি কেন- এমন প্রশ্ন ছিল সাবেক এই নির্বাচন কমিশনারের কাছে। জবাবে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। তিনি আরও বলেন, আমার ব্যক্তিগত মত হলো- রাজনৈতিক দলগুলো একেবারেই নগণ্য   হয়ে গেছে। যে কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। ইউপি নির্বাচনে গ-গোল করছে ক্ষমতাসীনরা নিজেরা নিজেরাই। দল থেকে বের করে দেওয়া হবে, বহিষ্কার করা হবে- কেন্দ্র থেকে এমন কড়া হুঁশিয়ারি দেওয়া সত্ত্বেও অসংখ্য বিদ্রোহী প্রার্থী হচ্ছেন। আবার ভোট করে তারা বিজয়ীও হয়ে আসছেন। এত বড় ভয় দেখানোর পরও বিদ্রোহী প্রার্থী কমছে না। দল থেকে বের করে দেওয়া হলেও তার কোনো প্রভাব পড়ছে না। একটা হযবরল অবস্থা চলছে।

ছহুল হোসাইন বলেন, এর প্রধান কারণ হলো- মাঠের প্রকৃত খবর উপরে যাচ্ছে না। যারা এসব খবর বহন করেন, তারা প্রভাবিত হয়ে পড়েন মাঝখানে। আসলে যেসব প্রার্থী বা ব্যক্তি জনপ্রিয়, মানুষ যাদের পছন্দ করে তাদের নামগুলো উপরে (কেন্দ্রে) যায় না। নানা কারণে ভুল মানুষের নাম উপরে পাঠানো হয়। ভুল মানুষকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। মাঠের প্রকৃত চিত্র জানতে দেওয়া হয় না দলের শীর্ষ নেতাদের। মাঝখানে যারা থাকেন, মনোনয়ন নিয়ে দেওয়ার জন্য তারা নানাভাবে পক্ষপাতিত্ব করেন নিজেদের স্বার্থে। আসল চিত্র বা জনপ্রিয় ব্যক্তিদের দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।

সরকারের সমর্থন থাকা সত্ত্বেও, দলের সহযোগিতা থাকার পরও কেন প্রার্থীরা ফেল করছেন? তাদের কি কোনো যোগ্যতা নেই? এর অর্থ হচ্ছে-প্রার্থী বাছাইয়ে যোগ্য ব্যক্তিদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে না।

কী ব্যবস্থা নিলে নির্বাচনে হানাহানি বন্ধ হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ছহুল হোসাইন বলেন, নির্বাচনে হানাহানি বন্ধ করতে হলে নির্বাচন কমিশনকেও শক্তিশালী হতে হবে। যোগ্য লোকদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সরকারসহ যতগুলো ইউনিট নির্বাচন কাজে জড়িত, তাদের সবাইকে বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিতে হবে কমিশনকে। নির্বাচন কমিশন শক্ত অবস্থান নিলেই নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা বিদ্যমান আইন ও বিধান মেনে চলবে ও কমিশনকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেবে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দল ও সরকারকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দিতে হবে কমিশনকে। এটা নিশ্চিত করা গেলেই নির্বাচনে হানাহানি কমবে বলে আমার বিশ্বাস।

সর্বশেষ খবর