শুক্রবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

উন্নয়নশীল দেশের চ্যালেঞ্জে সদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

উন্নয়নশীল দেশের চ্যালেঞ্জে সদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সদা প্রস্তুত। তিনি বলেন, জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছরে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেলাম। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব। এখানে যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশ সদা প্রস্তুত। গতকাল ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স-২০২১’ এবং ‘আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স-২০২১’ এর গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নেন। 

দেশের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় দেশের মানুষ একটা উন্নত জীবন পাবে। একেবারে তৃণমূলে পড়ে থাকা মানুষটারও জীবনমান উন্নত হবে, এটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি।

সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন দেশ হিসেবে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বিশ্বসভায় মর্যাদা নিয়ে চলবে। সেই আকাক্সক্ষা নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা শুরু করি। সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের সেনাবাহিনী চলতে পারে। কারণ, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে আমাদের সেনাবাহিনী অংশগ্রহণ করে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে তাদের চলতে হয়। তাই আধুনিক প্রযুক্তি, অস্ত্রশস্ত্র থেকে শুরু করে সব ধরনের সরঞ্জামাদি সম্পর্কে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সব সময় প্রশিক্ষিত ও জ্ঞানলাভ করবে, সেটাই আমার চেষ্টা।

শেখ হাসিনা বলেন, সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি দেশের যে কোনো ক্রান্তিলগ্নে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ আত্মত্যাগে সদা প্রস্তুত থাকে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে নানান কার্যক্রম তারা করেছে। দুর্যোগ মোকাবিলার পাশাপাশি দেশের অবকাঠামো ও আর্থিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাসহ শান্তি প্রতিষ্ঠা ও নিশ্চিতকল্পে দক্ষতা ও নিষ্ঠার পরিচয় দিয়ে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। পঁচাত্তর-পরবর্তী ২১ বছর সামরিক বাহিনীতে ১৯ বার ক্যু হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কত সামরিক কর্মকর্তা, জওয়ান, সৈনিক, সাধারণ মানুষকে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে, তা জানা নেই। অনেক পরিবার এখনো তাদের মরদেহের সন্ধান কিংবা আপনজনের সন্ধানও পায়নি। এমন একটি অস্থিরতার মধ্যে ২১টি বছর কেটেছে।

 

ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, দেশ-বিদেশের সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের জন্য একটি শীর্ষ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলার তাগিদ থেকে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আজ আমি সন্তুষ্টির সঙ্গে বলতে পারি, এই প্রতিষ্ঠান তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছে।

২০৪১ সালের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অগ্রসেনা হিসেবে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা কাজ করবেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর ২০৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতার শতবর্ষপূর্তি হবে। সেটাও আমাদের মাথায় রেখে এগিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পিস বিল্ডিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছি। জাতির পিতার প্রতিরক্ষা নীতিকে যুগোপযোগী করে জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি ২০১৮ প্রণয়ন করেছি। সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানায়, অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. আকবর হোসেন স্বাগত বক্তব্য দেন। তিনি সাফল্যের সঙ্গে কোর্স সম্পন্ন করায় অংশ গ্রহণকারী দেশি-বিদেশি কোর্স মেম্বার ও ফ্যাকাল্টি মেম্বারদের ধন্যবাদ জানান। এ বছর সেনাবাহিনীর ৩১ জন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, নৌ বাহিনীর ছয়জন কমোডর এবং বিমান বাহিনীর ছয়জন এয়ার কমোডরসহ ৬১ জন প্রশিক্ষণার্থী এনডিসি কোর্সে অংশ নেন।

বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সভায় যোগ দেন।

সর্বশেষ খবর